কাবুল: দাড়ি কামিয়ে ফেলা বা ছেঁটে ফেলা ইসলামের বিরুদ্ধ। সেই কারণে দাড়ি কামানো যাবে না। এমনই নির্দেশিকা জারি করল তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের নয়া সরকার। ওই দেশের হেলমান্দ প্রদেশে এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে সকল সেলুনে। কেউ দাড়ি কাটাতে এলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকা অমান্য করলে কড়া শাস্তি দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলেও বেশ কয়েকটি সেলুনেও একই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে সমগ্র আফগানিস্তানে। কারণ ক্ষোরকর্মের সঙ্গে বহু মানুষ জড়িত রয়েছেন। তাদের রুটিরুজি এখন প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে সরকারি নির্দেশিকায়। হেলমান্দের সেলুন গুলির বাইরে তালিবানের পক্ষ থেকে দাড়ি কামানো বা চুল কাটার বিষয়ে নির্দেশিকা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশিকা ঠিক মতো মানা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়েও নজরদারি চালানো হচ্ছে। ছদ্মবেশে সেলুনে গিয়ে খোজ নেওয়া হবে দাড়ি কামানো হচ্ছে কিনা। যদি কেউ ধরা পরে যায় তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দিন কয়েক আগে চার অপহরণকারীকে গুলি করে হত্যার পরে ক্রেনে করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল শহরের মাঝে। সেই ঘটনার স্মৃতি আফগানদের মনে এখনও টাটকা। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষেরাও সেই শাস্তির ভয়ে সেলুনে যাওয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এই সকল কারণে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে ক্ষৌরকর্মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভবিষ্যত নিয়ে। দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা কাজ বন্ধ করে ভবিষ্যতে কোন উপায়ে জীবন জীবিকা চলবে তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। এর আগে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান ছিল তালিবানের অধীনে। সেই সময়েও এই প্রকারের একগুচ্ছ নিয়ম জারি করা হয়েছিল। নিজেদের বদলে ফেলেছে বলে দাবি করলেও প্রকৃত ছবি যে ভিন্ন তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে এই নির্দেশিকায়।
গত অগস্ট মাসে কাবুল দখল করে তালিবান। সেই সঙ্গে সমগ্র আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ওই জঙ্গি সংগঠনের হাতে। ক্ষমতা পেয়েই মার্কিন সংস্কৃতি আফগানভূমি থেকে মুছে ফেলার দাবি করেছিল তালিবান। সেই কারণে আমেরিকান কায়দায় চুল-দাড়ি কাটা বন্ধ করতে উদ্যত হয়েছে তারা। দাড়ি নিয়ে ধর্মীয় বিধি থাকলেও চুলের ক্ষেত্রে নেই। মার্কিন বিরোধিতার কারণেই ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।