জল (Water) না খেলে মানুষ বাঁচতে পারে না। জলই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে বলে জলের অপর নাম জিবন।কিন্তু সেই জল খেয়েই মৃত্যু হল অ্যাশলি সামার (Ashley Summer) নামে এক মহিলার (Womann)। ২০ মিনিটে ২ লিটার জল খাওয়ার পরই ৩৫ বছর বয়সী ওই মার্কিন মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে, যা জলের বিষাক্ততা নামেও পরিচিত। জল খাওয়ার ফলে মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেকেই।
বাচ্চাদের স্কুলে গরমের ছুটি পড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের লেক ফ্রিম্যানে সপরিবার বেড়াতে গিয়েছিলেন অ্যাশলি। প্রচন্ড গরমের জন্য সেখানে গিয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অত্যধিক ঘাম, গলা শুকিয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। এই অবস্থায় অ্যাশলির মনে হয়েছিল, জল কম খাওয়ার ফলেই এমন হচ্ছে। তাই ঢকঢক করে চারটি ৫০০ মিলিলিটারের বোতল থেকে জল খেয়ে নেন। ২০ মিনিটে প্রায় ২ লিটার জল খান তিনি। কিছু ক্ষণ পর একটু সুস্থ বোধ করায় বাড়ি ফিরে আসেন তাঁরা। কিন্তু বাড়ি ফেরার পরেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুরু হয় মাথাব্যথা, পেটের যন্ত্রণা, মাথা ঘোরার মতো সমস্যা। মাথা ঘুরেও পড়ে যান অ্যাশলি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেও জ্ঞান ফেরেনি অ্যাশলির। ঘণ্টাখানেক পরে অ্যাশলিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
আরও পড়ুন:ফের অশান্ত মণিপুর, সংঘর্ষে মৃত ৬
চিকিৎসকেরা অ্যাশলের পরিবারকে জানিয়েছেন, তিনি হাইপোনাট্রেমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এটি জলের বিষক্রিয়া নামেও পরিচিত। রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ কমে গেলে এই জটিলতা দেখা দেয়। পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, অ্যাশলির দেহ দান করতে চান তাঁরা। অ্যাশলি না থাকলেও তাঁর কিডনি, ফুসফুস, লিভার পেয়ে যাতে অন্য কেউ সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক ব্ল্যাকে ফ্রোবার্গ বলেন, সাধারণত গরমের সময় বা যারা বাইরে রোদে কাজ করেন বা ঘন ঘন ব্যায়াম করেন, তাদের হাইপোনাট্রেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই ইলেকট্রোলাইট, সোডিয়াম ও পটাশিয়ামযুক্ত পানীয় পান করা গুরুত্বপূর্ণ। হাইপোনাট্রেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বিরল। তবে এর পরিণতি মারাত্মক হতে পারে। সাধারণত অল্প সময়ে খুব বেশি পরিমাণ পানি পান করলে বা অসুস্থতার কারণে কিডনিতে খুব বেশি পানি থাকলে এ সমস্যা দেখা দেয়।