নয়াদিল্লি: ব্রাজিল (Brazil), রাশিয়া (Russia), ভারত (India), চীন (China) এবং দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa), এই পাঁচটি দেশকে নিয়ে গঠিত ব্রিকস (BRICS)। সামনেই ব্রিকস গোষ্ঠীর প্রস্তাবিত বার্ষিক বৈঠক (Proposed Annual Summit) রয়েছে, তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। এর মাঝে খবর, ১৯টি দেশ ব্রিকসে যোগ দেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। গত সোমবার (২৪ এপ্রিল) দক্ষিণ আফ্রিকায় এই গোষ্ঠীর রাষ্ট্রদূত অনিল সুকলাল (Anil Sooklal, South Africa’s Ambassador to the Group) বলেছেন, ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি আগামী ২-৩ জুন জক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী কেপটাউনে (Cape Town, South Africa) বৈঠকে বসছে। বৈঠকে গোষ্ঠীর প্রসার নিয়ে আলোচনা চলছে।
২০০৬ সালে ব্রিক (BRIC) গঠনের রূপরেখা (Outline) তৈরি হয়েছিল। তারপর ২০০৯ সালের ১৬ জুন তা বাস্তবে রূপ পায়। এরপর, ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা এই আন্তর্জাতিক জোটে (International Alliance) যোগ দেয়। তারপর গোষ্ঠীর নাম সংশোধিত হয়ে ব্রিকস হয়েছে। কিন্তু ওখানেই শেষ। বিগত ২৩ বছরে আর কোনও দেশই যোগ দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেনি এই গোষ্ঠীতে। তবে এবার শোনা যাচ্ছে, ১৯টি দেশ ব্রিকসে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: ChatGPT | কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও ভয় পায়, তার আতঙ্কের কাহিনি কী?
অনিল সুকলালকে উদ্ধৃত করে একটি সংবাদমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, “ব্রিকসের বিস্তার (Expansion) নিয়ে আলোচনা হবে এবং তা কী করে সম্ভব হবে, তা নিয়েও কথাবার্তা হবে। এখনও পর্যন্ত ১৩টি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেওয়ার কথা বলেছে এবং ৬টি দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ব্রিকসে যোগ দেওয়ার বিষয়ে আমরা প্রতিদিনই চিঠি পাচ্ছি আমরা।” সুকলাল এটাও জানিয়েছেন, বর্তমান পাঁচ সদস্য দেশের বিদেশমন্ত্রীরা (Foreign Ministers) নিশ্চিত করেছেন, তাঁরা আগামী জুনে আলোচনা যোগ দিচ্ছেন।
আন্তজার্তিক মহলে ব্রিকস গোষ্ঠীর গুরুত্ব রয়েছে। অর্থনৈতিক দিক থেকে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এই গোষ্ঠীর সদস্য। বিশ্বমঞ্চে এই গোষ্ঠীর সিদ্ধান্ত ও বক্তব্যকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। আন্তর্জাতিক আঙিনায় ব্রিকস এখন নতুন জোরদার আওয়াজ (New Powerful Voice) হিসেবে গণ্য হচ্ছে। আর তার কারণ হলো, বিশ্ব বাণিজ্যে (World Trade) এই গোষ্ঠীর পাঁচটি দেশের ১৬ শতাংশ অবদান রয়েছে। বৈশ্বিক জিডিপি’তে (Global GDP) পাঁচ দেশের অবদান প্রায় ২৪ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই আন্তর্জাতিক জোটের সম্ভাব্য বিস্তার উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (USA) ও চীনের মধ্যে কৌশলগত প্রতিযোগিতা (Strategic Competition) বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব রাজনীতিও ক্রমাগত বদলাচ্ছে। এই অবস্থায় নতুন সদস্য দেশ এই গোষ্ঠীতে যোগ দেওয়া মানে ব্রিকসের শক্তি বাড়বে। সেই সঙ্গে ছোট শক্তি গুলিও গুরুত্ব পাবে। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কটের (Russia-Ukraine Crisis) জেরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অনেক দেশের জন্য উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ব্রিকস এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলির কৌশলগত স্বার্থ সুরক্ষিত করতে পারবে।