সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, যথেচ্ছ ব্যবহার নয় কৃত্রিম মিষ্টির। আর এতেই বেজায় চটেছে নরম পানীয় প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো। সংস্থার সতর্কবাণীর পিছনে নেই বিজ্ঞান, হুঙ্কার বিশাল আকারের কর্পোরট কর্তাদের। মে মাসের ১৫ তারিখ ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন বা হু-র বার্তাটি জানা যায়। দুনিয়াব্যাপী লক্ষ কোটি ডলারের ব্যবসা করা কৃত্রিম মিষ্টির বিরুদ্ধে সরাসরি সতর্ক করল হু।
নন স্যুগার সুইটেনারস বনাম হু
ওজন কমাবার জন্য নন্-স্যুগার সুইটেনারস (এনএসএস) ব্যবহারকারীরা সাবধান, জানালেন হু-র পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য বিভাগের ডিরেক্টর ফ্র্যানসেস্কো ব্রাংকা। এস-সালফেম, অ্যাসপারটেম, অ্যাডভানটেম, স্যাকারিন, স্টেভিয়া, সুক্রালোজ প্রভৃতিতে ওজন কমে না। বাজার চলতি স্যুগার-ফ্রি ধরনের সব কৃত্রিম মিষ্টিই এসব রাসায়নিক দিয়ে তৈরি। হু জানাচ্ছে, এসবে নেই কোনও পুষ্টিগুণও, বরং নানা রোগভোগের সম্ভাবনা বাড়ায়। তবে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তদের জন্য সতর্কবার্তা প্রযোজ্য নয়, জানাচ্ছে হু। কৃত্রিম মিষ্টিতে ডায়াবেটিস, কার্ডিও-ভাসক্যুলার প্রভৃতি রোগের শঙ্কা বাড়ে, হতে পারে কম বয়সে মৃত্যুও। এসব কৃত্রিম মিষ্টির থেকে বরং সাধারণ মিষ্টি অল্প পরিমাণে খাওয়া ভাল
আর এতেই রাগে অগ্নিশর্মা কোক, পেপসি বা ডাবর-এর মত নরম পানীয় ও খাদ্য প্রস্তুতকারীরা।
হু-র বিরোধিতা করে ইন্ডিয়ান বেভারেজ অ্যাসোসিয়েশন বা আইবিএ জানিয়েছে, বিজ্ঞানভিত্তিক নয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মূল্যায়ন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইবিএ-এর এক কর্তা বলেছেন, তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছেন, যাতে স্বাস্থ্য বান্ধব একটি স্পষ্ট নীতি নেওয়া যায়। আইবিএ-র সহযোগী সদস্যদের মধ্যে রয়েছে ব্রিটানিয়া, পেপার বোট, পার্লে অ্যাগ্রো, বিসলেরি, আইটিসি, মনডেলেজ, টাটা নারিশকো-র মতো সংস্থাগুলি। আইবিএ বলেছে, কৃত্রিম মিষ্টি নানা রোগের হাত থেকে বাঁচায়। এটি সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা গণস্বাস্থ্যের বড় ক্ষতি করবে। হু বলেছে, মিষ্টি কম খাওয়াই ভাল, ছোটোবেলা থেকেই কম মিষ্টিতে অভ্যাস করা ভালো। কিন্তু এই পরামর্শ কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। সংবাদ প্রতিষ্ঠান ইকনমিক টাইমস জানাচ্ছে, ভারতের খাদ্য নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বা ফাসাই বিষয়টিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। বৈজ্ঞানিকদের একটি প্যানেল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবাণীটির মূল্যায়ন করে দেখবে, জানিয়েছে ফাসাই। কৃত্রিম মিষ্টি নিয়ে দুনিয়াব্যাপী বিতর্কে হু-র বার্তা নয়া মাত্রা যোগ করেছে। আপনি কি এবার ব্যাপারটা নিয়ে ভাববেন? মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছেটাকে এবার কি খানিকটা সংযত করবেন?