অ্যালকোহল বা মদ নিয়ে বিস্তর গবেষণা (research) হয়েছে এ যাবৎ। একদিকে যেমন মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে কিডনি (kidney) ও লিভার (liver) ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্তের(damage) বিষয়টি উঠে এসেছে বার বার ঠিক তেমনই আবার চিকিত্সকের পরামর্শ মেনে খুবই অল্প মাত্রায় মদ্যপানের বেশ কয়েকটি সুফল রয়েছে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে অল্প মাত্রায় মদ্যপান হার্ট ভাল রাখে (litle amount of alcohol good for heart), ওয়াইন (wine) বয়স ধরে রাখতে সাহায্য (delays ageing) করে ইত্যাদি। তবে সম্প্রতি মদ্যপান (alcohol consumption) নিয়ে একটি গবেষণায় এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে যা বদলে দিচ্ছে সব হিসেব নিকেশ। জানা গেছে মদ্যপান যে শুধু কিডনি বা লিভারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তাই নয় এটা আমাদের ডিএনএ কেও (alcohol damages DNA) প্রভাবিত করতে পারে।
মদ্যপানের যা একটা আধটা ভাল দিক আছে বলে জানা গিয়েছিল এখন সেই সব তথ্যকে পুরোপুরি নাকচ করে অ্যামেরিকান ক্যানসার সোসাইটির একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই গবেষণায় আরও জানা গেছে প্রতি বছর মদ্যপানের কারণে ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৫ হাজার। এদের মধ্যে ক্যানসারে মৃত্যুর সংখ্যা বছরে কমপক্ষে ১৯ হাজার। আর মদ্যপানের ফলে এতদিন যে জানা গিয়েছিল শুধু লিভার, হার্ট বা কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়। নিয়মিত মদ্যপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ডিএনএ।
সাম্প্রতিকালে এই নিয়ে গবেষণায় নিমহ্যানসের একটি রিপোর্টে আরও জানা গেছে যে অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে ডিএনএ এমন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে মদ খাওয়া বন্ধ করে দিলেও এই ক্ষতি অপূরণীয় থেকে যায়।
মদ্যপানের ফলে ঠিক কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ডিএনএ
মদ্যপানের ফলে রক্তে (blood) ও লালায়(saliva) অ্যাসিটালডিহাইডের(acetaldehyde) মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিন্যাল ট্র্যাক্টে (gastrointestinal tract) স্কোয়ামস সেল কারসিনোমার (squamous cell carcinoma) ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে। রাসায়নিক (chemical) হিসেবে এই অ্যাসিটালডিহাইড অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল কারসিনোজেনিক (reactive carcinogenic compound) কমপাউন্ড। এটা এতটাই ক্ষতিকারক যে এর ফলে ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ডিএনএ। অ্যাসিটালডিহাই পয়েন্ট মিউটেশন (point mutation)বা ডিএনএ-ডিএনএ ক্সস লিঙ্কের (DNA-DNA cross link) মতো ডিএনএতে নানা রকমের রাসায়নিক ক্রিয়া ঘটায়। শরীরের খাবার খাওয়া পর যেমন হজম প্রক্রিয়ার একাধিক রাসায়নিক ক্রিয়ার মাধ্যমে খাবার ভাঙ্গা হয় তেমনি মদ্যপানের পর হজমের একাধিক প্রক্রিয়া হয়। এই প্রক্রিয়া বেশ কঠিন। আর এই প্রক্রিয়াতে যদি কোনও কারণে গন্ডগোল হয় তখন অ্যাসিট্যালডিহাইডের অংশগুলো কোষে জমা হতে থাকে। এই ভাবে চলতে থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ডিএনএ।
এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় মিথাইলেশন (methylation), এটা অসংখ্য জিনকে (numerous genes) শুধু প্রভাবিত করে না বড়সড় ক্ষতিও (damages) করে। যাঁদের প্রচুর পরিমাণে মদ খাওয়ার অভ্যেস আছে তাঁরা যদি পরবর্তী সময়ে মদ একেবারে ছেড়ে দেন তা হলেও মিথাইলেশন লেভের(methylation level) আগের মাত্রায় পৌঁছয় না। বা যারা একদমই মদ্যপান করেন না তাদের মতো হয় না। মদ্যপান যে ডিএনএ-র পাকাপাকি ভাবে ক্ষতি করে এটাই তার বড় প্রমাণ।