যেভাবে প্রত্যেকবার নতুন নতুন রূপে আর্বিভাব হচ্ছে করোনা ভাইরাস তাতে প্রত্যেকবারই দেখা যাচ্ছে রোগের নতুন নতুন উপসর্গ। শরীর দেখা দিচ্ছে নতুন নতুন সমস্যা। এই অবস্থায় সংক্রমণের সঙ্গে লড়ে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা এবং বজায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই এই কোভিডকালে শরীর সুস্থ রাখাই আমাদের প্রত্যেকের প্রাথমিক কাজ। অতিমারির আবহাওয়ায় তাই চিকিত্সকরাও জোর দিচ্ছেন পুষ্টিকর ও সুষম আহার খাবার ওপর।
শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পর্যাপ্ত পরিমানে পেলে সুস্থ থাকবে এবং বজায় থাকবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
যে ভাবে দ্রুত ছড়াচ্ছে ওমিক্রণ তাতে প্রথম স্তরের প্রোটিন যেমন ডাল ও বীজ যাতে ৯ রকমের প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে। তাই ওমিক্রন বা করোনাভাইরাসের নতুন কোনও ভেরিয়েন্টের সঙ্গে লড়তে নিত্য দিনের খাদ্যতালিকায় এই খাবারগুলো না রাখলেই নয় জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সেগুলো কী কী দেখে নিন-
শাক-সবজি
শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি থাকে। যেমন ব্রোকোলি, মটরশুটি, ক্যাপসিকাম, পালং শাক সহ অন্যান্য মরশুমী শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, হেলদি ফ্যাট, ফাইবার ও আয়রন থাকে। যদি আপনি ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে এগুলোর সুপ বা ব্রোথ বানিয়ে খেলে ভীষণ উপকার পাবেন। এতে থাকা পুষ্টি আপনাকে তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে সাহায্য কর।
ফল
ফল মানেই হেলদি গ্লুকোজ, ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন সি সহ একাধিক অ্যান্টিভাইরাল নিউট্রিয়েন্টস। পাশাপাশি কমলালেবু, আঙুরের মত সিট্রাস ফল শরীর হাইড্রেটেড রাখে। কোভিড সংক্রমণ থেকে বাঁচতে কিংবা উপসর্গের সঙ্গে লড়তে শরীর হাইড্রেটেড রাখা ভীষণ জরুরী। তাই নিয়মিত ফল খাওয়া ভাল। বিশেষ করে স্ন্যাক্স হিসেবে দুপুরের খাওয়ার পরে কিংবা আবার ব্রেকফাস্টের পর অল্প খিদে পেলে জাঙ্ক ফুডের বদলে ফল খান। খিদেও মিটবে আবার শরীর ইমিউনিটি বুস্টিং নিউট্রিয়েন্টস পাবে।
বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার
এই সব খাদ্য দ্রব্যে প্রচুর পরমাণে সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, প্রোটিন, ভিটামিন ই ও বি সিক্সের মতো পুষ্টিকর উপাদান থাকে। বাদাম যেমন আমন্ড, আখরোটে যে পরিমানে প্রোটিন আছে বিশেষ করে যারা নিরামিষাশী তাদের জন্য এটা খুবই উপকারী। এদিকে কুমড়োর বীজ, তিসির বীজ বা চিয়া সিডে প্রচুর পরিমানে ফাইটোকেমিক্যালস ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এদিকে স্ন্যাকস হিসেবেও ভীষণ কাজের এই বাদাম ও বীজ। জাঙ্ক ফুডের দিকে হাত না বাড়িয়ে এগুলো খেলে যেমন শরীর পুষ্টি পাবে তেমন আবার ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। শরীর সুস্থ রাখতে তাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অপরিহার্য।
দুগ্ধজাতীয় খাবার
দুগ্ধজাতীয় দ্রব্য যেমন দুধ, ইয়গহার্ট, মাখন, ঘি আমাদের শরীর পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। ঘিতে এক ধরনের বিশেষ উপাদান বিউট্রিক অ্যাসিড পাওয়া যায়। এই উপাদান নাকি মুহূর্তে শরীরে শক্তির সঞ্চার করে কিন্তউ এর ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায় না। এখানেই শেষ নয় গাটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে প্রয়োজনীয় গুড ব্যাক্টেরিয়ার খাবারের জোগান দেয়। এই গুড ব্যাক্টেরিয়া ডায়জেস্টিভ ট্র্যাকের প্যথোজেন নষ্ট করে বর্জ্য পদার্থ নষ্ট করে এবং শরীরের বারকি অংশ ঢুকতে দেয় না।
এছাড়া দুগ্ধজাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি থাকে। তাই আপনি যদি ইতিমধ্যেই ওমিক্রনে সংক্রমিত তাহলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে ইয়গহার্ট আপনার জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর।
অন্যান্য খাবার
এই সব খাদ্য সামগ্রীর পাশাপাশি পাওয়ার প্যাকড খাবার জিনিস যেমন মাশরুম, মাছ, ডিম নিত্যদিনের খাদ্যতালিকায় রাখত পারেন। এই খাবারগুলো তে এমন কিছু বিরল পুষ্টিকর উপাদান আছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখে।