স্বাস্থ্য থেকে রূপচর্চা সব জায়গায় এতদিন পর্যন্ত জয় জয়কার ছিল অ্যাপেল সিডার ভিনেগার। ছিল বলছি কেন তা হয়ত অনেকেই ভাবছেন। কারণ এখনও আপনার রান্নাঘর আলো বা ফ্রিজে সাজিয়ে রাখা আছে অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের বাড়তি বোতল যাতে একটা দিনও এই অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ছাড়া আপনাকে কাটাতে না হয়। কিন্তু অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের এই একাধিপত্য কে টেক্কা দিতে বাজার ইতিমধ্যেই এসে হাজির হয়েছে আরেকটি নতুন প্রোডাক্ট। কোকোনাট ভিনেগার। এসে থেকেই বাজার এমন মাতিয়ে তুলেছে যে ইতিমধ্যেই কোকোনাট ভিনেগারের গুণে মুগ্ধ হেলথ ও ফিটনেস এনথুজিয়াস্টরা একে এখন সুপারফুডের আখ্যা দিয়েছে।
একাধিক প্রাকৃতিক উপাদানে সমৃদ্ধ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার উপকূলবর্তী এলাকার এই বিশেষ ভিনেগারটি। ওজন কমানো থেকে শুরু করে হজম ক্ষমতা বাড়ানোর মতো একাধিক উপকারিতা রয়েছে কোকোনাট ভিনেগারের। নারকেল ফুলের রস প্রায় ৮ থেকে ১২ মাস পর্যন্ত খামি বা ফার্মেন্টেশনে রাখার পর অক্সিডেশন প্রক্রিয়ায় ইথানল থেকে অ্যাসেটিক অ্যাসিডে পরিণত করে তৈরি হয় কোকোনাট ভিনেগার। হালকা স্বাদ ও অস্বচ্ছ দেখতে এই তরল পদার্থটি নিয়ে কেন এখন মেতে রয়েছে সবাই জেনে নিন তার কারণ-
এই কোকোনাট ভিনেগারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রাকৃতিক খনিজ পদার্থ। যেমন পোটেশিয়াম, আয়রণ, জিঙ্ক ও ক্যালসেয়িাম। তাই অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের বদলে যদি এই ভিনেগার ব্যবহার করেন তা হলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত কমবে। তবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ভিনেগারের ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ নিন।
হজমে সাহায্য করে করে
কোকোনাট ভিনেগারে প্রচুর পরিমাণে উপকারী এনজাইম ও প্রোবায়োটিক আছে যা হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার পাশপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখানেই শেষ নয় কোকোনাট ভিনেগারে অন্তত ১৭ রকমের অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে তা শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী।
লো গ্লাইসিমিক ইন্ডেক্স
কোকোনাট ভিনেগারের লো গ্লাইসিমিক ইন্ডেক্সের কারণে এটি ডায়বিটিক রোগীদের জন্য ভীষণ উপকারী। পাশাপাশি যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্যেও এটা বেশ কার্যকরী। কবজি ডুবিয়ে খাবার আগে যদি এই কোকোনাট ভিনেগার খেতে ফেল যায় এটা খাবারে থাকা কার্বস ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ত্বকের জন্য উপকারী
এই কোকোনাট ভিনেগার ত্বকের দাগ ছোপ, ডার্ক সার্কেল, অ্যাকনে, চামড়ার কুঁচকে যাওয়ার মতো ত্বকের নানা সমস্যার সমাধান করে।
জীবাণু সংক্রমণ ও অসুখ দূরে রাখে
কোকোনাট ভিনেগারের অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টিব্যক্টেরিয়াল কার্যকারিতা রয়েছে। এর ফলে একাধিক শারীরিক সমস্যা ও জীবাণু সংক্রমণ মোকাবিলা করতে সাহায্য করে।
কোকনাট ভিনেগারে কোনও ক্যালোরি নেই তাই এটা ওজন কমাতেও সাহায্য করে। পাশাপাশি এতে যে অ্যাসেটিক অ্যাসিড রয়েছে তা খিদে কমায় ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। একইসঙ্গে এটা শরীর থেকে বাড়তি মেদ ঝরাতেও সাহায্য করে।
সত্যি বলতে কি এই কোকনাট ভিনেগারের উপকারিতা বলে শেষ করার মত নয়। তবে উপকারিতা যতই থাকুক না কেন নিত্যদিনের খাদ্যতালিকায় এই ভিনেগার রাখার আগে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না যেন।
(ছবি সৌ : Indiamart)