ব্রেকফাস্ট বলুন বা প্রাতরাশ। শরীর সুস্থ রাখতে সকালের এই খাবার যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে যেটা জেনে রাখা প্রয়োজন সেটা হল, এই খাবারে প্রোটিনের মাত্রা যথাযথ রয়েছে কি না। চিকিৎসকদের মতে, আমাদের সার্বিক বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন৷ কিন্তু সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ভারতে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের শরীরে প্রোটিনের গুরুতর অভাব রয়েছে। ৯০ শতাংশ মানুষ প্রোটিনের উপকারিতার বিষয়টিই জানেন না। উল্টে বেশি প্রোটিন মানেই ওজন বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন অনেকে। তাই এই সব ‘মিথ’-এ কান না-দিয়ে জেনে নিন ব্রেকফাস্ট ও প্রোটিনের সঠিক সমন্বয়ে কীভাবে স্বাস্থ্যবান হয়ে উঠতে পারেন আপনি।
ওজন বাড়তে দেয় না
অনেকেই ওজন কমাতে গিয়ে দিনের গুরুত্বপূর্ণ খাবার বা মিল স্কিপ করে যান। অনেকে আবার সময়ের অভাবে এই দিকে নজর দেন না। তাই ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজন নিয়মিত প্রোটিন সমৃদ্ধ ব্রেকফাস্টের। প্রোটিনযুক্ত খাবার আপনার হজমশক্তি বাড়ায়। এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরে থাকার ফলে বারবার খিদে পায় না। পাশাপাশি মেটাবলিজম বা খাবার হজম করে খাবারে থাকা প্রয়োজনীয় উপাদানগুলি কাজ লাগানোর যে প্রক্রিয়া আছে তার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় প্রোটিন। মেটাবলিজম বাড়লে বাড়ে ক্যালোরি বার্ন। এর ফলে ওজন বাড়ার মতো সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, নিয়ম মেনে ব্রেকফাস্ট করেও কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই ক্লান্তি বা অলস ভাব আসে। সেক্ষেত্রে বুঝতে হবে ব্রেকফাস্টে সঠিক প্রোটিন নেই বরং ক্যালোরি মাত্রা বেশি রয়েছে। যেমন টোস্ট, বা বাজার চলতি সিরিয়ালস বা মুসলি খেলে এ-রকম মনে হতে পারে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ রিফাইন্ড সুগার থাকে। এর ফলে শরীরে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘদিন এই ভাবে চলতে থাকলে ডায়বিটিস হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
শরীরে ক্যালোরির মাত্র নিয়ন্ত্রণে রাখে
সকালের খাবারে বেশি প্রোটিন থাকা মানেই আপনার শরীরের ক্যালোরির চাহিদা কমবে। প্রোটিন যুক্ত খাবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরে রাখে। এর ফলে বারবার খিদে পাওয়া বা খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। কমে যায় বাড়তি ক্যালোরি শরীরে জমার সম্ভাবনা। বিশেষ করে যাঁরা দিনের অধিকাংশ সময়ে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের সামনে বসে কাজ করেন তাঁদের জন্য এটা খুবই কার্যকর। খাবারে বেশি প্রোটিন থাকলে সেটা ঘ্রেলিন নামক হরমোনকে আটকে দেয়। এই হরমোনের কারণে বারবার খিদে পায়। যাঁরা ওজন কমাতে চান তাঁদের ক্ষেত্রেও এটা খুবই কাজের।
ব্যায়াম ও কসরতের পর শরীর চাঙ্গা রাখে
প্রোটিনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যামিনো অ্যাসিড। এই অ্যামিনো অ্যাসিড আমাদের শরীরের কোষগুলির স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী। শরীরে মাংসপেশির শক্তি বাড়িয়ে হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে প্রোটিন অপরিহার্য।
ফিল গুড ফ্যাক্টর আনে প্রোটিন
অনেক সময় আচমকাই মনটা কীরকম খারাপ হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনও বিশেষ কারণ ছাড়া মন খারাপ হলে ধরে নেওয়া যেতে পারে যে মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলছে গাট মাইক্রোবস (Gut Microbes)। এই গাট মাইক্রোবস আমাদের পেটে থাকে। এবং সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অনুসন্ধানে জানা গিয়েছে এই গাট ব্যাক্টেরিয়া আমাদের মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে আশেপাশের পরিবেশ সম্পর্কে আমাদের উপলব্ধি ও দৃষ্টিভঙ্গিকে সাময়িক ভাবে প্রভাবিত করতে পারে।