কলকাতা: বর্তমান যুগের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল স্মার্টফোন (Smart Phone)। সকালে ঘুম থেকে উঠে রাতে বিছানায় যাওয়া পর্যন্ত স্মার্টফোন ছাড়া জীবন আজকাল ভাবতেই পারি না আমরা। খাওয়া-দাওয়ার খোঁজ, বিনোদন, পড়াশোনা সবটাই ওই মুঠোফোনের উপর নির্ভর করে। মোবাইলের এই নেশা ছড়িয়ে পড়েছে ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যেও। ২-৩ বছরের বাচ্চারাও এখন কীভাবে ফোন ব্যবহার করতে হয় জানে। তবে জানেন কি অল্পবয়সে হাতে ফোন পাওয়ার ক্ষতিকারক প্রভাব ঠিক কতটা হতে পারে?
সম্প্রতি এক গবেষণায় (Research) উঠে এসেছে চাঞ্চল্য়কর তথ্য। ওয়াশিংটনের এক অলাভজনক সংস্থা ‘স্যাপিয়েন ল্যাব’ বিশ্বব্যাপী একটি গবেষণা চালিয়েছে। এই গবেষণার মূল বিষয় হল, ৮-২৪ বছরের ছেলে-মেয়েদের হাতে ফোন দেওয়ার ফলে তাদের জীবনের উপর কী প্রভাব পড়ে? চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, ল্যাটিন আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকা জুড়ে মোট ৪১ টি দেশের ২৭ হাজার ৯৬৯ জনের উপর সমীক্ষা চালানো হয়। যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। ছেলে ও মেয়ে উভয়ই অংশ নেয় এই সমীক্ষায়। এর মধ্যে ৪,০০০ জন ভারতীয়।
এই গবেষণার ভিত্তি হিসেবে ৪৭টি মানসিক অবস্থাকে বেছে নেওয়া হয়। এরপর সমীক্ষার স্বার্থে ব্যবহৃত ১৮-২৪ বছর বয়সীরা কোন বয়সে হাতে ফোন পেয়েছেন এবং তাঁদের মধ্য়ে কোন মানসিক লক্ষণগুলি দেখা গিয়েছে, তা পর্যবেক্ষণ করা হয়, গত ৫ মাস ধরে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত যে সব ছেলেমেয়েরা ছোটোবেলায় স্মার্টফোন হাতে পেয়েছিল , তাঁরা বর্তমানে বিষন্নতায় ভুগছেন। এঁদের মধ্যে কিছু জনের মধ্যে আত্মহত্যা করার প্রবণতা দেখা গিয়েছে। এছাড়া উদ্বেগ বেড়েছে এবং অসামাজিক হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন:Recipe | একঘেয়ে ঝোল-ঝাল আর নয়, স্বাদ বদলাতে আজই বানান ডিমের মিহিদানা
মহিলাদের উপরন প্রভাব- কম বয়সে মোবাইল ব্যবহারের ফলে পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে মানসিক সমস্যা বেশি। যে সব বাচ্চা মেয়েরা ৬ বছর বয়সে হাতে ফোন পেয়েছেন, তাঁদের ৭৪% আজ মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। আর যাঁরা ১৮ বছর বয়সে মোবাইল ফোন পেয়েছেন, তাঁদের ৪৬% বর্তমানে অবসাদে ভুগছেন।
পুরুষদের উপর প্রভাব- যে সব ছেলেরা ৬ বছর বয়সে হাতে স্মার্টফোন পেয়েছেন, তাঁদের ৪২% মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। অন্যদিকে, যে সব ছেলেরা ১৮ বছর বয়সে ফোন হাতে পেয়েছেন, তাঁদের ৩৬% আজ মানসিক রোগের শিকার।
সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন। খিটখিটে হয়ে গিয়েছেন। সমাজের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ক্রমশ। এছাড়াও তাঁদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে আত্মহত্যার প্রবণতাও।