Placeholder canvas
কলকাতা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪ |
K:T:V Clock
বঙ্গভঙ্গ বিতর্ক: বারলা, সৌমিত্রদের নেপথ্যে সঙ্ঘ পরিবার?
জয়ন্ত চৌধুরী Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২ জুলাই, ২০২১, ০১:২২:১৪ পিএম
  • / ৪৩৫ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

ভোট মিটতে না মিটতে বাংলা ভাগের আওয়াজ উঠেছে। খুব ক্ষীণ সেই আওয়াজ। তবুও উপেক্ষণীয় নয়। অদূর ভবিষ্যতে এই রব গর্জনে পরিণত হতে পারে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিকে নিয়ে আলাদা হওয়ার দাবির মধ্যে অন্তত তেমনই ইন্ধন রয়েছে।

বিজেপি সাংসদ জন বারলা ফারাক্কার ওপর থেকে দার্জিলিং পাহাড় নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের দাবি তুলেছেন। স্বভাবতই, তা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছিল। তার রেশ কাটার আগেই বিজেপির আরেক সাংসদ সৌমিত্র খাঁ দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলা নিয়ে পৃথক রাঢ়বঙ্গ গঠনের দাবি তুলে বসেছেন।  কেন্দ্রের শাসক দলের দুই জনপ্রতিনিধির বাংলাকে টুকরো করার এই হুঙ্কার নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, দলের দুই সাংসদের মন্তব্য একান্তই তাঁদের নিজেদের। তাতে নাকি দলের অনুমোদন নেই।

কিন্তু হঠাৎ করে আলাদা রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি তোলা হল কেন ? সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটে পর্যুদস্ত বিজেপি। তুলনামূলক ভাবে উত্তরবঙ্গে তাদের ফলাফল কিছুটা ভালো। গত ভোট পর্বে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রসাদ নাড্ডা প্রমুখ গোটা রাজ্য চষে বেড়িয়েছেন। সেখানে তাঁদের মুখে একবারও বাংলা খণ্ডিত করার কোনো প্রসঙ্গ শোনা যায়নি। দলের ভরাডুবির পর প্রায় বিনা ভনিতায় উত্তরবঙ্গের জন বারলা  বাংলা ভাগের পক্ষে মন্তব্য বাজারে ছেড়ে  দিয়েছেন। একইভাবে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সৌমিত্র খাঁও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রাঢ় বঙ্গের দাবি তুলেছেন। এই ঘটনাক্রম বলে দিচ্ছে, ভোটে মুখ থুবড়ে পড়ার পর ‘বঙ্গভঙ্গের’ বিষয়টা তুলে ধরা হয়েছে। নীতিগতভাবে  রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) তথা বিজেপি ক্ষুদ্র রাজ্য গঠনের পক্ষপাতী হলেও, বাংলার নির্বাচনী এজেন্ডায় তার নামগন্ধ ছিল না। অতএব ভোট মিটতেই খুব পরিকল্পিত ভাবে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী ইস্যু তুলে আনা হয়েছে।

তাহলে হঠাৎ কেন ? আর যদি এই দাবি তুলতেই হয় ,তাহলে দলের রাজ্য নেতৃত্ব নয় কেন ? আসলে, ভোটে পায়ের তলায় মাটি হারিয়েছে বিজেপি। তৃণমূল প্রশাসনকে কাবু করতে কেন্দ্র চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি। প্রতিপদে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে উদ্যত কেন্দ্র। কিন্তু কিছুতেই তৃণমূল দল বা রাজ্য প্রশাসনকে বাগে আনতে পারছে না বিজেপি। উল্টে নির্বাচন পরবর্তীকালে রাজ্য বিজেপির সংগঠনও বেশ ছন্নছাড়া। এই পটভূমিতে আল টপকা বঙ্গভঙ্গের ডাক। একদিকে জনমানসে অস্থিরতা উস্কে দেওয়া অন্যদিকে জল মাপা।

আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে  বঞ্চনার ইতিহাসকে ঘিরে একটা ভাবাবেগ উত্তরবঙ্গে বহুযুগব্যাপি বিদ্যমান। ভাষা,সংস্কৃতির প্রশ্নে স্বাতন্ত্র্য জাতি সত্ত্বার দাবি প্রায়শই মাথা চাড়া দিয়েছে উত্তরবঙ্গের নানা প্রান্তে।  পার্বত্য দার্জিলিং নিয়ে গোর্খাল্যান্ড দাবি ঘিরে তুমুল আলোড়ন হয়েছে। কামতাপুর, গ্রেটার কোচবিহার দাবিকে কেন্দ্র করে বারে বারে উত্তপ্ত হয়েছে পাহাড় থেকে তরাই-ডুয়ার্স।  আপাতত তা স্তিমিত মনে হলেও তুষের আগুনের মতো নিবু নিবু। সেটাকে খুঁচিয়ে জাগানোর পরোক্ষ প্রয়াস বারলার এই দাবি। অনুপ্রবেশ রোখার নামে ধর্মীয় বিভাজন উস্কে দেওয়ার সবরকম চেষ্টা চালিয়েও কাজ হাসিল হয়নি বিজেপির। এবার আঞ্চলিক বিভাজনকে হাতিয়ার করে রাস্তায় নামা যায় কি না তার মহড়া দিলেন বারলা। একই পথে হেঁটেছেন রাজ্য বিজেপির যুব শাখার শীর্ষ নেতৃত্ব, সাংসদ সৌমিত্র।

আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, নয়া ভাবনা নিয়ে বিতর্ক

দিলীপ ঘোষ বা শুভেন্দু অধিকারী বারলাদের পাশে নেই বলে দাবি করেছেন। এমন একটি গুরুতর বিষয়ে দলের সিদ্ধান্তের পরোয়া না করে মিডিয়ায় মন্তব্য ছুড়ে দিলেও তাঁদের রাশ টানেনি রাজ্য নেতৃত্ব। টানবেনই  বা কেন, যদি দলের নকশা মেনেই তা হয়ে থাকে! অনেকটা চোরকে চুরি করতে বলে গৃহস্থকে সজাগ থাকাতে বলার কৌশলের মতো। উত্তরবঙ্গে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা তৈরি বিজেপির উদ্দেশ্য। তাহলে, কেন দিলীপ বা শুভেন্দু দ্বিমত বারলার সঙ্গে ?  এও এক রণ কৌশল বিজেপির। দক্ষিণবঙ্গে গত ভোটে বড় ধাক্কা খেয়ে টালমাটাল পদ্ম শিবির। এই অবস্থায় বঙ্গভঙ্গের জিগির তুললে দক্ষিণের জেলাগুলিতে দলের সাইন বোর্ড খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

আরও পড়ুন: জুলাই মাসে ১৫ দিন বন্ধ ব্যাঙ্ক

তাই বাংলা প্রবাদের মতো ‘গৃহস্ত কে সজাগ’ রাখছেন দিলীপ-শুভেন্দুরা। ক্ষুদ্র রাজ্য গঠনে সঙ্ঘ পরিবারের এজেন্ডা কার্যকর করার পথে বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মোটেই সহায়ক নয়। আরএসএস তার হিন্দু জাতীয়তাবাদী  রাষ্ট্র নির্মাণের অন্যতম লক্ষ্য শক্তিশালী কেন্দ্র নির্মাণ। সঙ্ঘের ‘এক দেশ এক নিশান, এক বিধান’ কার্যকর করতে হলে রাজ্যগুলির ক্ষমতা সংকোচন অনিবার্য। তাই জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে লাদাখকে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করেছে বিজেপি সরকার। একই লক্ষ্যে সর্বশেষ প্রজেক্ট, কেন্দ্রশাসিত লাক্ষাদ্বীপ। ইতোমধ্যেই সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ  মুসলিম মৎস্যজীবীদের উৎখাতে সচেষ্ট  হয়েছে কেন্দ্র নিযুক্ত প্রশাসক। বহুদলীয় গণতন্ত্রে আস্থা নেই সঙ্ঘ পরিবারের। হিন্দুত্ব প্রতিষ্ঠার মৌলবাদী পথে বহুত্ববাদ প্রধান অন্তরায়।

একদিকে শক্তিশালী কেন্দ্র অন্যদিকে একদলীয় রাষ্ট্রপতি কেন্দ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা তাদের লক্ষ্য। তাই উত্তরবঙ্গের স্বার্থরক্ষার আবেগ উস্কে দেওয়া। রাজ্য নেতৃত্ব প্রকাশ্যে বঙ্গভঙ্গের প্রসঙ্গ উড়িয়ে দিলেও দিলীপদের আস্তিনের তলায় লুকানো এজেন্ডায় অশনি সংকেত স্পষ্ট। বাংলা ভাঙার আওয়াজ  ক্ষীণ হলেও সাধু সাবধান।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২
১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭১৮ ১৯
২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬
২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তামাক সেবন তলানিতে
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
কেন ইরান হামলা থেকে পিছু হটছে ইজরায়েল?
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
হিজবুল্লার আক্রমণ কৌশলের কাছে হেরে গেল ইজরাইল
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
ধনদেবীর আরাধনায় মিমি
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
দক্ষিণ কোরিয়াকে হিংস্র রাষ্ট্রের তকমা দিতে সংবিধান বদলাল উত্তর কোরিয়া
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি সদগুরুর যোগা সেন্টারের
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
পূর্ণিমা কান্দুর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জল্পনা বাড়ল
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
বেনামি লেনদেন আইনের বাতিল ধারা পুনর্বহাল সুপ্রিম কোর্টে
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
ঘূর্ণিতে জব্দ বাজবল, দ্বিতীয় টেস্টে জয়ী পাকিস্তান  
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার দেশলাই, বোতল, কৃষ্ণনগর যাচ্ছে ফরেন্সিক দল
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
বেঙ্গালুরুতে শিকড়, সেখানেই শিকড় গেড়ে শতরান রাচীনের
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের ভ্রুকুটি, বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
ইএসআইয়ে দমবন্ধ হয়ে রোগী মৃত্যু
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
স্পিন জুটিতে ভর করে মুলতানে জয়ের পথে পাকিস্তান  
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
৪৬- এর লজ্জা এবং চিন্নাস্বামী জুড়ে অদ্ভুত নিস্তব্ধতা!
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team