Placeholder canvas
কলকাতা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
মাইরি বলছি গুরু, আজও তোমাকে দেখলে দাঁড়িয়ে যাই
অনিমেষ বৈশ্য Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০২১, ১২:০৮:৫৭ এম
  • / ৮২৮ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

এই নাও গুরু, দুটো বাতাস। আর এক গেলাস জল। ও হ্যাঁ, দুটো সিনেমার টিকিটও আছে। দেখো তো চিনতে পারো কি না। ফার্স্ট ক্লাস। আড়াই টাকা। নীল রঙের পাতলা কাগজ। সিট নম্বর দেওয়া আছে। চিনতে পারছ? তখন আমার বাবার নাম ছিল ছবি বিশ্বাস, আমার প্রেমিকার নাম সুচিত্রা সেন, আমার বন্ধুর নাম তরুণকুমার। শুধু কি আমার? বাংলার সবার।

তুমি যে-বছর মারা গেলে, ঠিক তার দু’বছর পরে পাড়ার হলে ‘সপ্তপদী’ এল। কী ভিড়! অনেক গুঁতিয়ে দুটো টিকিট পেলাম। একটায় আমি বসব। আর একটায় ? ফাঁকা ছিল সিটটা। যার আসার কথা, আসেনি। জানতাম আসবে না। জুলাই মাস। বৃষ্টি পড়ছিল অঝোরে। ভাঙা সাইকেলটা স্ট্যান্ডে রেখে ঝুপ্পুস ভিজে দাঁড়ালাম হলের বারান্দায়। তাকিয়ে আছি দূরে। সে কি আসবে? হলের বারান্দায় সপ্তপদী-র স্টিল ছবি। কোনও ছবিতে তুমি ফুটবল খেলছ, কোনওটায় তুমি সুচিত্রাকে বাইকে নিয়ে যাচ্ছ শেষ না-হওয়া পথের দিকে, তুমি ওথেলো, সুচিত্রা ডেসডিমোনা। তুমি খুন করছ সুচিত্রাকে—ইট ইজ দি কজ মাই সোল… ইয়েট আই উইল নট শেড হার ব্লাড….ইয়েট শি মাস্ট ডাই, এলস শি উইল বিট্রে মোর মেন…। সিটটা কি ফাঁকাই থাকবে? কেউ কি এসে বলবে, ” তুমি অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছ? বিশ্বাস করো, রাস্তায় খুব ভিড়। কেন ভিড় কে জানে? আমার একদম ভিড় ভালো লাগে না। তোমার লাগে? ইস একদম ভিজে গেছ। এসো মুছিয়ে দিই।”

 

আরও পড়ুন : দিলীপ সাবের বাংলার ভুল ধরিয়ে দিতেন সুচিত্রা

কোথায় কে?
কেউ এল না। সিটটা ফাঁকা। কিন্তু ফাঁকা নয়। তুমি এসে মাঝে-মাঝে বসছিলে। তুমি তো কবিতা লিখতে না গুরু। কিন্তু তোমার গায়ে কবিতার গন্ধ। তোমার গায়ে পাখির ডানার গন্ধ। সেই থেকে কবিতার গন্ধ নিয়ে তুমি আমার পাশে আছ। আজও।

সেদিন ওই হলের কাছে গেছিলাম গুরু। হল আর নেই। আলুর গুদাম। কী যে কষ্ট! তোমার দম আটকে আসে না? ওই হলেই তো তোমার জন্ম, ওই হলেই তোমার মিলন, ওই হলেই মৃত্যু। ওখানে এখন বাদুড় ওড়ে। রিনা ব্রাউনের অলৌকিক শ্বাস ঘাপটি মেরে আছে আলুর বস্তায়। ওই ফাঁকা সিটটা কি আছে ? আজও কি সেখানে কবিতার গন্ধ আছে? তোমার ছোট নীড় ভেঙে গেছে গুরু।

মাইরি বলছি গুরু, আজও তোমাকে দেখলে দু”মিনিট দাঁড়িয়ে যাই। হয়তো খুব তাড়া। ট্রেন ধরব। হঠাৎ দেখি তুমি গাইছ, ‘জোনাকিরা দীপ জ্বেলে আমাদের সাথে রাত জাগবে..।’ থেমে যাই। পা চলে না। মনে হয়, পুরো ছবিটা দেখি। চুলোয় যাক আপিস। কিন্তু তা আর হয় না।

কিংবা হয়। ট্রেনে উঠি। কত লোক! ঘেমো, ক্লান্ত, বাচাল, সবজান্তা, পণ্ডিত, মূর্খ। কিন্তু তোমার মুখটা ভাসতে থাকে। আমি গুনগুন করি, ‘তারপর সারারাত দু’জনে একা একা ভাবব হৃদয়ের লিপিকাতে কে যেন লিখেছে এক কাব্য…।’ কী বলব গুরু, হৃদয়, কাব্য, জোনাকি—এসব শব্দ আজও আমাকে পেড়ে ফেলে। তোমার আঁকা ভুরু, মুখের মেকআপ, তোমার ধুতি আমার কাছে আজও কী নতুন! না, প্যানপেনে লাগে না। তুমি গুরু…কিছু কথা খুঁজে পাই না। তুমি গুরু তুমিই। সেই যে রিনা ব্রাউন তোমার ঘাড়ে থুতনি ঠেকিয়ে বলেছিল, ‘তুমি।’

আরও পড়ুন : অন্য মৃণাল

জানো গুরু, তুমি সেই হরি হে দীনবন্ধু। আমারও বন্ধু, বাপেরও বন্ধু। কী আশ্চর্য! আমার ছেলেরও বন্ধু।

প্রায় রোজ ‘নায়ক’ দেখে। তার পর বলে, এই যে অরিন্দম তাকাল, এই যে নাকের ডগায় আঙুল রাখল, এই যে বলল, আই উইল গো টু দি টপ, দি টপ, দি টপ…আর কেউ পারবে? আমি ছেলের কথা পুরো না-শুনেই বলি, ‘ধুর খেপেছিস? কেউ পারবে না।’ আমি জানি গুরু, তুমি যা পারো, কেউ পারে না, পারতে পারে না, পারবেও না কোনও দিন।

বর্ষা এলেই তোমার কথা মনে পড়ে। তোমার মৃত্যুমাস বলে? না। বর্ষার মেঘে প্রিয় মানুষের ছায়া ভাসে। আমার মৃত স্বজনের ছায়া, আমার পাঠশালার ছায়া, নিবিড় ঘন জামরুল গাছের ছায়া, রবিবাবুর ছায়া…আর তোমার ছায়া। কোথায় যেন পড়েছিলাম, তোমার প্রিয় গানের কথা। তুমি বলেছিলে, ‘মনে কী দ্বিধা রেখে গেলে চলে’—আমার প্রিয় গান।’ বিশ্বাস করো, ওটা আমারও খুব প্রিয় গান। বর্ষার ভেজা গন্ধ আছে ওই গানে, সিক্ত যূথীর গন্ধবেদন আছে। কী যে মন খারাপ হয়! বুকের ভিতর এত নদী-খাল ছিল? তুমি কোথায় গুরু? ওই গানের কথার মতো ‘দূর ভুবনে’?

না, তুমি আমার চৌকাঠেই আছো। যেদিন চলে গেলে তোমার বয়স চুয়ান্ন। আমি তখন নবম শ্রেণি। তোমার নাকে তুলো গোঁজা ছিল। ‘ফাঁকতালে মহাপ্রয়াণ’ কি একেই বলে? সেদিনও কি বৃষ্টি নেমেছিল? মনে নেই।

আরও পড়ুন : তোমার দেখা নাইরে

আর তোমার বয়স পেরিয়ে এসেছি। তুমি আর আমি প্রায় সমবয়সী। একটা ফুটবল ম্যাচ হবে? সেই সপ্তপদীর মতো। মাঠের ধারে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছে রিনা ব্রাউন। তুমি গোল দিচ্ছ। ভালো লাগে না গুরু। মরে যেতে ইচ্ছে করে। তুমি চলে গেলে, সিনেমা হল চলে গেল, আমার ঝোপের খঞ্জনা পাখিটা চলে গেল…। কেউ নেই ।
একটা গান গেয়ো তুমি। বৃষ্টি নেশাভরা সন্ধ্যাবেলার গান। তুমি আমার চুনিলাল, তুমিই আমার দেবদাস। সেদিন বাহিরে ঝড় বইবে। আর নয়নে বারি।
তাই না গুরু?

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩
১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯২০
২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭
২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

কলকাতার তাপমাত্রা পৌঁছবে ৪১ ডিগ্রিতে, মঙ্গল থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি!
শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
শিশুখাদ্যে চিনি মেশানোর অভিযোগ সুইস সংস্থার বিরুদ্ধে
শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে দার্জিলিংয়ে জোড়া সভা শাহ-রাজনাথের
শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
তৃণমূলের বৈঠকে বিজেপি প্রার্থীর ভাই
শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
ভালো সুযোগ আসছে এইসব রাশির জাতকের জীবনে 
শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
ভোট শেষ হতেই বোমাবাজিতে উত্তপ্ত শীতলকুচি
শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
ভোট শেষ হওয়ার দুঘন্টার মধ্যেই বিজয় মিছিল তৃণমূল–বিজেপি
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
প্রথম দফায় ১০২ কেন্দ্রে কোন কোন হেভিওয়েটের ভাগ্য চূড়ান্ত হল
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
Stadium Bulletin | স্টার্ককে যদি হাবাসের হাতে ছাড়া যায়?
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এসএসসি মামলার রায় সোমবার
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
শক্তিপুর ও বেলডাঙার ওসিকে সাসপেন্ড করল কমিশন
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
কয়লা পাচার মামলায় জয়দেবের জামিনের আর্জি খারিজ হাইকোর্টে
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
রেকর্ড! টানা ৬১৩ দিন কোভিডে আক্রান্ত থেকে মৃত্যু
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
৪০ ডিগ্রিতে ফুটছে কলকাতা
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
মণিপুরে ৫ বুথে বন্ধ ভোট, নাগাল্যান্ডে ভোট বয়কট ৬ জেলায়
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team