নিঝুম রাতে ঠাকুমার কোলে শুয়ে ব্যঙ্গমা-ব্যঙ্গমীর গল্প শুনেছ? যদি না শুনে থাকো তবে জীবনের আসলটাই হারিয়েছ। যারা শুনেছে তারা জানে ঠাকুমার স্নেহের পরশ কী। নাতি-নাতনির জন্য তা কতটা দরকার।
এক পাতে ভাত মেখে ছোট ছোট গাল করে খাইয়ে দেওয়া। ঠাকুমার আঁচলে মাথা রেখে গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়া। ছোট্ট শিশু থাকে মাটির তালের মতো। তাকে যেমন আকার দেবে, সে তেমন ভাবেই বেড়ে উঠবে। একটা ছোট্ট শিশুর বেড়ে ওঠার পিছনে বিশাল অবদান ঠাকুমার। আঁচল ঘিরেই থাকে শৈশব। এমনটাই বলছে বিজ্ঞান।
‘এফএমআরআই’ যাকে বলা হয় ফাংশনাল ম্যাগনেটিক রেসোন্যান্স ইমেজিন। যেখানে পরীক্ষা করে জানা যায়, শিশুর মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে অনেকটাই ভূমিকা রয়েছে তাদের ঠাকুমার। বর্তমানে সবাই প্রায় একা। বড় পরিবার আর দেখা যায় না বললেই চলে। সবটাই নিউক্লিয়ার পরিবার। একা…একা…একা। একটা শিশুর একা বেড়ে ওঠা। একা ভাবনা চিন্তা। একা পড়াশোনা। একা মোবাইল ফোনে গেম খেলা। তাতেই ডুবে থাকা। গল্পের বই না পড়া। বাবা-মা চাকরিরত হলে তো কথাই নেই। নিজের মনের কথা কাউকে বলতে না পারা। বাড়তে থাকা একাকিত্ব।
অন্যদিকে ঠাকুমা থাকলে শিশুকে গল্প শুনিয়ে খাওয়ানো। আদর করে ঘুম পাড়ানো থাকে। শিশু শেখে ছোট থেকেই কীভাবে সবার কথা ভাবতে হয়। শুধু নিজের নয়। কোনও ছোট জিনিস হলেও ভাগ করে খাওয়া। আনন্দ, দুঃখ ভাগ করে নেওয়া দরকার। ফলে বিকাশ হয় মানসিক বিকাশ। সে কখনও আত্মকেন্দ্রীক হয়ে উঠবে না। আমি শুধু আমি নয়, ভাববে আমাদের কথা।