কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: ‘ব্ল্যাক ডেথ’ যার বাংলা করলে দাঁড়ায় কৃষ্ণমৃত্যু। মারণ এই রোগের উৎস কোথায়? প্রায় সাতশো বছর বছর পর এই রহস্যের জট খুললেন বিজ্ঞানীরা। মধ্যযুগের এই ভয়াবহ অতিমারীর শিকড় খুঁজে বের করতে বিজ্ঞানীদের কম বেগ পেতে হয়নি। শতকের পর শতক, গবেষণা আর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কেটে গিয়েছে। একবার আলো দেখতে পেয়েও ফের তা হারিয়ে গিয়েছে সময়ের সুড়ঙ্গে। শেষপর্যন্ত অবশ্য উত্তর পাওয়া গেল।
কৃষ্ণমৃত্যু রহস্যের জট খুলতে কিরঘিজস্তানের এক গণকবরে যেতে হয় বিজ্ঞানীদের। কিরঘিজস্তান মধ্য এশিয়ার একটি দেশ। আফগানিস্তান লাগোয়া। কিরঘিজস্তানের শতাব্দী প্রাচীন ওই গণকবরেই কৃষ্ণমৃত্যু রহস্যের উত্তর লুকিয়ে আছে, বুঝতে পারেন বিজ্ঞানীরা। গণকবরের মৃতদেহ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। মৃতদেহের দাঁত থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়। কেননা মানুষের দাঁতের গঠনে অসংখ্য রক্তবাহী শিরা-উপশিরা চলাচল করে।
বিজ্ঞানী কেন তাতাম দুনিয়ার প্রশ্ন ছিল ব্ল্যাক ডেথের উৎস কোথায়? ঐতিহাসিক, বিজ্ঞানী, চিকিৎসকদের একটা দল ডিএনএ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে পেরেছেন, কিরঘিজস্তানের একটি বিশেষ প্লেগের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে কৃষ্ণমৃত্যুর বীজ। বুধবার ‘নেচার’ প্রত্রিকার একটি রিপোর্টে, কীভাবে রহস্যের জট খুলল তা বিস্তারিত লিখেছেন বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন- Pregnant Ichthyosaur Fossil: হাঙর-ডলফিনের গর্ভবতী পূর্বসুরির পূর্ণাঙ্গ জীবাশ্ম উদ্ধার
প্রথম ঢেউয়েই ভয়াবহ মড়কের চেহারা নিয়ে হাজির হয়েছিল কৃষ্ণমৃত্যু। ১৩৪৬ থেকে ১৩৫৩ মাত্র এই আট বছরেই ইওরোপ, পশ্চিম এশিয়া এবং আফ্রিকার জনজাতি ফাঁকা করে দিয়েছিল ব্ল্যাক ডেথ। জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ কমে যায় এই মারণ ভাইরাসের আক্রমণে। প্রথম ১৮৯০ সালে অন্ধকারের মধ্যে এক টুকরো আলো দেখতে পান বিজ্ঞানীরা। কিরঘিজস্তানের ওই শতাব্দী প্রাচীন গণকবরের খোঁজ পাওয়া যায়।
কীভাবে খুলল জট? বিজ্ঞানীরা ডিএনএ সংগ্রহ করে তা থেকে জিন সিকোয়েন্সিং করেন। অসংখ্য ডেটা থেকে জিনগত মিল খতিয়ে দেখা হয়। সব মিলিয়ে সাতটি মৃতদেহের দাঁত থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে তারপরেই নিশ্চিত হতে পারেন বিজ্ঞানীরা। কিরঘিজস্তানের এক বিশেষ প্রজাতির প্লেগ থেকেই কৃষ্ণমৃত্যু অতিমারীর চেহারা নেয়।