কালিঘাট মন্দির চত্বরে তখন বলিউডের বাঙালি পরিচালক সুজয় ঘোষের প্রথম সফল ছবি ‘কাহানি’র শট চলছে দিনের আলোয়। এই ছবি তৈরি হয়েছিল ২০১২ সালে। চায়ের দোকানের সামনে একটা বেঞ্চে বসে আছেন সন্তানসম্ভবা বিদ্যা বাগচী অর্থাৎ বিদ্যা বালান। আর রয়েছেন পুলিশের উর্দি পরা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। একটু আগেই একটি শট শেষ হয়েছে। চায়ের দোকানের বেঞ্চে এক পা তুলে বাংলায় গল্প করছেন পরমের সঙ্গে বিদ্যা। তখন ‘আমাকে আমার মত থাকতে দাও গানটি যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘। বিদ্যার মুখে গল্প করতে করতে সেই গান শোনা গেল। পরম তখন একটি বাংলাব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দুজনের গল্প তখন বেশ জমে উঠেছে। এই গান ছাড়াও বিদ্যা কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা নিয়ে পরমের সঙ্গে বাংলাতেই আলোচনা করছিলেন। বাংলা যে তাঁর অত্যন্ত প্রিয় ভাষা। তা তিনি পরবর্তীকালে অনেকবার কথা প্রসঙ্গে বলেছেন।
বিদ্যার প্রথম বড়পর্দায় আবির্ভাব বাংলা ছবি দিয়েই। গৌতম হালদারের পরিচালনায় ‘ভালো থেকো’ ছবিতে। বাংলা এবং বাঙালা ভাষার সঙ্গে তার সম্পর্ক বহুদিনের। দক্ষিণ ভারতীয় এই অভিনেত্রী মনেপ্রাণে বাঙালি। ২০০৫ সালে তিনি বলিউডে ডেবিউ করেন আর এক বাঙালি পরিচালক প্রদীপ সরকারের ‘পরিণীতা’ ছবির মাধ্যমে। এই ছবির গল্প লিখেছেন বাঙালি লেখক কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বিভিন্নভাবেই বিদ্যা বালানের বাঙালি কানেকশন। বহু ছবিতে তাকে বাঙালি চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে। আর সেই প্রসঙ্গ তুলেই তিনি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন আজও তাকে অনেকেই বাঙালি বলে মনে করেন। সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেছেন,’অধিকাংশ লোকজন আমায় বাঙালি মনে করেন এবং তারা আমার সঙ্গে বাংলা ভাষাতেই কথা বলেন। আমি বাংলা ভাষাটা জানি বলে বলতে বা বুঝতে পারি। আমার পরিবার মাঝেমধ্যে হতবাক হয়ে যায় গোটা বিষয়টা দেখে। আমাকে কেউ ভিদ্যা বললে আমি তাদের বিদ্যা দিদি বলতে শেখাই।’ যখন কোন সঞ্চালক তার সঙ্গে মজা করে বাংলায় কথা বলেন অভিনেত্রী সেই কথার উত্তর ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলাতেই দিয়ে থাকেন। বলেন, ‘আমি আসলে মন থেকে বাঙালি’।