সে দেশের নাট্যচর্চা যে যথেষ্ট উন্নতমানের তা সংস্কৃতি মনস্ক মানুষ মাত্রই জানেন। সে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে মঞ্চাভিনয় এখন ভারতসহ বিভিন্ন দেশে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর চলতি মাসেই সবেমাত্র খুলেছে বাংলাদেশের নাট্য-মঞ্চ। আজ বুধবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালার মূল মঞ্চে প্রদর্শিত হবে নতুন নাটক ‘আ নিউ টেস্টামেন্ট অব রোমিও এন্ড জুলিয়েট’। উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের ‘দ্য ট্রাজেডি অফ রোমিও এন্ড জুলিয়েট’কে প্রশ্নবানে বিদ্ধ করে এটি রচনা করেছেন সাইমন জাকারিয়া। প্রযোজনা করছে ‘এম্পটি স্পেস’ নাট্যদল। নাটকটি ভারতবর্ষ সহ পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশে মঞ্চস্থ হয়েছে। এক ঝাঁক তরুণ নাট্য-শিল্পীদের সঙ্গে নিয়ে নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন দলের শিল্পনির্দেশক নুর জামান রাজা। মঞ্চসজ্জা থেকে শুরু করে আলো, পোশাক পরিকল্পনা,আবহসংগীত সবই করেছেন নুর। এই নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন একজন কবি।
পূর্ণিমার একরাতে সমাধিস্থল ফোটা ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা হন।গেয়ে ওঠেন নিষ্ঠা-প্রেমের গান। এমনই এক রাতে কবির গান শুনে রোমিও আর জুলিয়েট এসে হাজির হন তাঁর সামনে। কবি জুলিয়েটকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন রোমিও আসলে জুলিয়েটের আগে ভালোবাসতো রোজালিনকে। তারপর এক রাতের ভোজসভায় জুলিয়েটকে দেখে তার রূপে মুগ্ধ হয়ে সে ভুলে যায় রোজালিনকে। একথা শুনে প্রেমিক যুগল অসহায় বোধ করে। তারা সাহায্য চান ফাদার ফায়ারের। তারপর ফাদার গোপনে তাদের চার হাত এক করে। রোমিও-জুলিয়েটের বিয়ে সম্পন্ন হয়। সত্য প্রকাশ না করে সেই ফাদার আবার প্যারিসের সঙ্গে জুলিয়েটের বিয়ে দিতে রাজি হয়েছিলেন।
এরপর ফাদার তাঁর নিজের গোপন কর্মকে আড়াল করতে জুলিয়েটকে আত্মহত্যায় বাধ্য করেছিলেন। নিষ্ঠা-প্রেমের গান গাওয়া সেই কবি সেটাও মনে করিয়ে দেন। কোভিদ এইসব কান্ড কারখানা দেখে ফাদার আহবান করেন উইলিয়াম শেক্সপিয়ারকে। কবি সেক্স পিয়ার কেউ রেহাই দেন নি। প্রশ্নবানে জর্জরিত করে ছেড়েছেন শেক্সপিয়ারের ‘ট্রাজেডি অফ রোমিও এন্ড জুলিয়েট’এর থিম কে। ভেঙে দিয়েছেন শেক্সপিয়ারের এই নাটকের গঠনকে। নির্দেশক নুরজামাল রাজা বলেছেন রোমিও-জুলিয়েট এর বিখ্যাত বিয়োগান্তক প্রেম উপাখ্যানকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছেন এর রচয়িতা সাইমন জাকারিয়া। রচয়িতা একজন কবির চরিত্রের মধ্যে দিয়ে সমালোচকের অবস্থান থেকে রোমিও-জুলিয়েট এর প্রেম, পরিণয় ও বিয়োগের ঘটনাপ্রবাহ গুলোকে দেখিয়েছেন। ধর্ম থেকে রাজনীতি কিংবা সংস্কৃতি যে ক্ষমতার-প্রভাব বলয়ের বাইরে নয়, সে কথাই উঠে এসেছে এই নাটকের মাধ্যমে।