কলকাতা: আমি এখন থেকে আর কোনও ছবির প্রিমিয়ার এ যাব না। নিজের ছবির ও না। পরের ছবির ও না। এমনিও কম যাই, সে নিজের হোক বা পরের। বৃহস্পতিবার ফেসবুক পোস্ট করে জানিয়ে দিলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee)। এদিন পোস্টে স্বস্তিকা লিখেছেন, আমি যে ছবি তে কাজ করব, জীবন উজাড় করে তার প্রচার করব। প্রিমিয়ার এ পৌঁছে এক হাজারটা বাইট আর আরও কয়েক শো সেলফি আর বাজে ছবি তুলতে পারছিনা। শেষে থ্যাংক ইউ লিখেছেন, হাতজোড়ো ও হৃদয়ের ইমোজি দিয়েছেন । স্বস্তিকা বরাবরই স্পষ্টবাদী। উচিত কথা বলতে সাঁত-পাঁচ ভাবেন না। টলিপাড়ায় ঠোঁট কাটা নামে পরিচিত। তিনি বরাবরই চর্চায় থাকেন, সে তাঁর কাজের জন্য হোক বা ব্যক্তিগত জীবন। টলিউডের আভ্যন্তরীণ বিষয় থেকে শুরু করে সমসাময়িক সমস্ত বিষয়েই নিজের মনের কথা স্পষ্টভাবেই বলতে পারেন তিনি। সামনেই মুক্তি পাচ্ছে তাঁর নতুন ছবি ‘দুর্গাপুর জংশন’। আর তার আগে এসেই টলিউডে কাজের পরিস্থিতি ও পরিবেশ নিয়ে কথা বললেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee)।
অভিনেত্রী জানিয়ে দিলেন এবার থেকে আর কোনও ছবির প্রিমিয়ার এ যাব না। নিজের ছবির ও না। পরের ছবির ও না। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত? স্বস্তিকা বলেন, প্রিমিয়ার এ ভিড় বা তারপরের দিন কাগজে কভারেজ দেখে বা তৎক্ষণাৎ সামাজিক মাধ্যমে রিলস দেখে, সিনেমাটা দেখব কিনা এটা কোনও দর্শক নির্ধারণ করেন না। করেন ছবির টিসার, ট্রেলার, পোস্টার দেখে, বা যদি ছবির কলাকুশলী দেখে তাদের সিনেমাটা দেখতে ইচ্ছে করে। আমরা যথেষ্ট প্রচার করি, সেটা মানুষকে জানান দেওয়ার জন্যই যে এই কাজটা আসছে। অর্ধেক সময়েই ক্রিউ মেম্বারদের ডাকা হয়না। হয়তো এইচওডিদের সেই সম্মান প্রাপ্তি হয়, তাই বলে সব ডিপার্টমেন্টের এর এইচওডিদের যে ডাকা হয় তাও নয়।
আরও পড়ুন: ‘সহচরী’র হাত ধরে আবার লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে মুনমুন সেন!
তিনি বলেন, বাবার সঙ্গে বাবার অনেক ছবির স্পেশাল স্ক্রিনিং এ গিয়েছি। টগরি দেখতে গেছিলাম নবীনা প্রেক্ষাগৃহে। বাবা এবং সন্ধ্যা রায় ছিলেন সেই ছবিতে। সেখানে সকল কাস্ট ক্রিউ কেই ডাকা হত। পরিচালক থেকে হিরো এবং যে জামাকাপড় ইস্তিরি করেছে তাকেও। শুধু দেখন দারিতে এসে ঠেকেছে সব। আর খাপ খাওয়ানো যাচ্ছেনা। এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বাড়ি ফেরার চেয়ে পরে নাহয় টিকিট কেটে দেখে নেব। এমনিও অন্যদের সিনেমা টিকিট কেটেই দেখি। এবার থেকে নিজেরটাও তাই করব। সবার হাতে ফোন। সমস্ত ফুটেজ ওই ফোন এই তোলা হচ্ছে। কে আসলে মিডিয়া, আর কে ব্লগার, ইনফ্লুয়েন্সার, ভ্লগার বোঝার উপায় নেই। কেনই বা তাদেরকে বাইট দেবো বা তাদের ফোন এ বন্দি হব জানিনা।
হঠাৎ করে এই শহরে সবাই পাপারাজ্জি । আর কোনও ডেকরাম নেই, কোনও নির্ধারিত জায়গা নেই যেখানে মোবাইল হাতে ফটোগ্রাফাররা দাঁড়াবেন, সবাই গায়ের ওপর উঠে পরে, পারলে নাকের ফুটোর মধ্যে মোবাইল গুঁজে দিতে পারলেই ব্যাস বেস্ট রিলটা বানিয়ে ফেলবে। আমার ছবি তুলতে গিয়ে সেদিন ট্রেলার লঞ্চ এ কেউ একটা আমাকেই ধাক্কা মেরে ফেলে দিল। এত ঠ্যালাঠেলি ধাক্কাধাক্কি পোষায় না। আমি বাউন্সার নিয়ে ঘুরতে অক্ষম, সক্ষম হতে চাই না। রাস্তা ঘাটে শুটিং করতে লাগে ঠিকই কিন্তু তার বাইরে নিজের সিনেমা দেখতে গিয়ে যদি পেছনে বাউন্সার নিয়ে যেতে হয় কারণ মানুষ গায়ে উঠে পড়বেই তাহলে সেখানে না যাওয়াই ভালো। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত, ব্যক্তিগত ডিসিশন। আমায় আর নেমন্তন্ন করবেন না। মুখের ওপর না বলতে না পারলে হাসি মুখে কাটিয়ে দেবো। আমি যে ছবি তে কাজ করব, জীবন উজাড় করে তার প্রচার করব।
অন্য খবর দেখুন