ওয়েব ডেস্ক: কাশ্মীরের পহেলগাঁও(Pahelgao,Kashmir) হামলার জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের মাটিতে অপারেশন সিঁদুর(Operation Sindoor) কার্যকর করেছে। তারপর থেকেই সারাদেশে সেনাবাহিনী প্রশংসায় ভাসছে। বলিউড তারকারাও এগিয়ে এসেছেন তাঁদের বাহবা দিতে। বলা বাহুল্য ভারতীয় সেনাবাহিনী থেকে অনেকেই আবার বলিউডে অভিনয় করতে এসেছেন।
এদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, জনপ্রিয় অভিনেতা নানা পাটেকরের(Nana Paterar) নাম। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময় তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে(Indian Army) কাজ করেছেন। যিনি ‘ক্রান্তিবীর’ ‘প্রহার’ এর মতো ছবিতে অভিনয় করে দর্শকদের মুগ্ধ করেছিলেন।
এছাড়াও বলিউডের প্রখ্যাত গীতিকার আনন্দ বক্সী(Lyricist Anand Bakshi) বিনোদন দুনিয়ায় যোগদানের আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন। আনন্দ বকসে বলিউডে ‘শোলে(Sholay),’ ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’, ‘অমর প্রেম(Amar Prem)’ এমন বহু জনপ্রিয় ছবির গান লিখেছেন।
এছাড়াও ‘থ্রি ইডিয়টস'(Three Idiots) ছবির সেই অধ্যাপকের চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছিলেন সেই অচ্যুত পোদ্দার(Achyut Poddar) তিনিও ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন ক্যাপ্টেন ছিলেন। দীর্ঘদিন সেনাবাহিনীতে সক্রিয়ভাবে থাকার পর চলচ্চিত্রে আসেন।
মেজর রুদ্রশিশ মজুমদার একজন সেনা অফিসার যিনি অভিনেতা হয়েছিলেন এবং ছিখোর, জার্সি এবং মিসেস আন্ডারকভারের মতো বেশ কয়েকটি বলিউড ছবিতে কাজ করেছিলেন। তিনি ১১ ই জুন, ২০১১, থেকে July জুলাই, ২০১৮ পর্যন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
অভিনেতা বিক্রমজিৎ কানওয়ারপাল একজন অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ২০০২ সালে একজন মেজর হিসাবে ভারতীয় সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেছিলেন এবং ২০০৩ সালের ৩ দিয়ে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। ৫২ বছর বয়সে ‘কোভিড’ আক্রান্ত হয়ে ২০২১ সালের
১ মে মারা যান।।
অভিনেতা রেহমান খান একজন ভারতীয় অভিনেতা ছিলেন, তিনি তাজমহল, ফির সুবা হোগি, দিল নে ফির ইয়াড কিয়া এবং সাহেব বিবি অর গুলাম সহ চলচ্চিত্রগুলিতে তাঁর কাজের জন্য পরিচিত ছিলেন।
কলেজ শেষ করার পরে, তিনি পাইলট হিসাবে ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যোগদান করেছিলেন।
১৯৪৪ সালে, তিনি ভারতীয় বিমান বাহিনী থেকে বেরিয়ে এসে প্রভাত স্টুডিওতে বলিউডের একজন পরিচালকের তৃতীয় সহকারী হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন।
প্রবীণ অভিনেতা গুফি পেইন্টাল(Gufi Paintal), যিনি জনপ্রিয় টেলিভিশন সিরিজ মহাভারতে শাকুনি মামা চরিত্রে তাঁর ভূমিকার জন্য পরিচিত। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করেছেন । ১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের সময়, প্রয়াত অভিনেতা চীন সীমান্তে সেনা আর্টিলারিগুলিতে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
অনেকেই হয়তো জানেন যে ১৯৯৯ সালে যখন কারগিল যুদ্ধ শুরু হয়েছিল তখন ভারতীয় সৈন্যরা সম্মুখ সারিতে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিল। সেই ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ছিলেন তিনবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা নানা পাটেকার। তিনিও দেশের সেবা করার জন্য সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছিলেন। কিন্তু কিভাবে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন! ছবি
নানা পাটেকর পরিচালিত ‘প্রহার: দ্য ফাইনাল অ্যাটাক’(Prahaar: The Final Attack) সিনেমা ১৯৯১ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটিতে মেজর প্রতাপ চরিত্রে অভিনয় করেন নানা পাটেকর। সিনেমাটির কাজ শুরুর আগে সেনাবাহিনীর মারাঠা লাইট ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টে ৩ বছর কঠোর প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এরপরও অনেকটা কাঠখড় পোহাতে হয়েছিল এই অভিনেতাকে। অমিতাভ বচ্চন সঞ্চালিত ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ অনুষ্ঠানের ১৬ তম সিজনে সেই গল্প শুনিয়েছিলেন নানা পাটেকর।
অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে নানা পাটেকর বলেন, “আমি আমাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ ফার্নান্দেজকে চিনতাম। তাই আমি তাকে ফোন করি। আমার ইচ্ছার কথা শুনে তিনি বলেন, ‘এটা অসম্ভব।’ আমি তাকে বলেছিলাম, কমিশনের প্রশিক্ষণ ৬ মাস হলেও ৩ বছর প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আমার কথা শুনে তিনি অবাক হয়ে যান। তারপর আমার প্রশিক্ষণ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চান। মারাঠা লাইট ইনফ্যান্ট্রির সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানার পর জিজ্ঞাসা করেছিলেন— ‘তুমি কখন যেতে চাও?”