গত ২৬ মার্চ বারানসীর হোটেল রুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল ভোজপুরি অভিনেত্রী আকাঙ্ক্ষা দুবের ঝুলন্ত দেহ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা হয়েছিল এটি আত্মহত্যা। কিন্তু আকাঙ্ক্ষার পরিবার তা মানতে রাজি হয়নি। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠলে অভিনেত্রীর প্রেমিক সমর সিং এবং সমরের ভাই সঞ্জয় সিংক ও অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
এবার তদন্ত নতুন মোড় নিয়েছে। যে চাঞ্চল্যকর খবর সামনে আসছে তা হল আকাঙ্ক্ষার অন্তর্বাস থেকে নাকি পাওয়া গেছে বীর্য। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে মৃত্যুর আগে এক ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন হোটেলে। তিনি নাকি মাত্র ১৭ মিনিট ছিলেন। এমনকি আকাঙ্ক্ষার মৃতদেহর ময়না তদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে অভিনেত্রীর কব্জিতে ক্ষতের চিহ্ন ছিল। লিভারে পাওয়া গিয়েছিল অজ্ঞাত তরল।
পুলিশকে উদ্ধৃত করে হিন্দুস্তান টাইমস পত্রিকা জানিয়েছে যে আকাঙ্ক্ষার অন্তর্বাসে যে বীর্য পাওয়া গিয়েছে তার সঙ্গে অভিযুক্তদের ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হবে। ইতিমধ্যে নমুনা সংগ্রহ করে তা ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
আকাঙ্ক্ষার পরিবারের আইনজীবী শশাঙ্ক শেখর ত্রিপাঠির অভিযোগ— তদন্তকারীরা তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না। পুলিশের ‘গতিবিধি সন্দেহজনক’। এখন পর্যন্ত আকাঙ্ক্ষার মায়ের বয়ান পর্যন্ত পুলিশ রেকর্ড করেনি বলেও অভিযোগ তার।
আকাঙ্ক্ষার ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও রয়েছে রহস্য। প্রয়াত নায়িকার পেটে মিলেছে বাদামী রঙের অজানা তরলের উপস্থিতি। তা ছাড়াও তার কব্জিতে মিলেছে আঘাতের চিহ্ন। শরীরে অ্যালকোহলের চিহ্নও পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে সন্দীপ সিংয়ের সঙ্গে হোটেল রুমে প্রবেশ করেন আকাঙ্ক্ষা। ১৭ মিনিট পর সন্দীপ বেরিয়ে যান।
এর আগে অকাঙ্ক্ষার মা মধু দুবে বলেন— ‘আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য দুজন ব্যক্তি দায়ী। অভিনেতা সমর সিং এবং সঞ্জয় সিং আমার মেয়েকে খুন করেছে। এর আগে সমরের ভাই সঞ্জয় সিং আকাঙ্ক্ষাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। আর এ কথা আকাঙ্ক্ষা আমাকে ফোনে জানিয়েছিল।’অভিনেতা সমর সিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন আকাঙ্ক্ষা। মৃত্যুর কিছুদিন আগে এ সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন এই অভিনেত্রী।
১৯৯৭ সালে মির্জাপুরে জন্মগ্রহণ করেন আকাঙ্ক্ষা। সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি টিকটকেও জনপ্রিয় আকাঙ্ক্ষা। মৃত্যুর আগের রাতেও সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন এই অভিনেত্রী। ভোজপুরি গানে নিজের একটি নাচের ভিডিও পোস্ট করেন।
খুব অল্প বয়সেই কেরিয়ারের সাফল্যের মুখ দেখেছিলেন আকাঙ্খা। তবে ২০১৭ সাল নাগাদ মানসিক অবসাদের শিকার হন তিনি, তবে ধীরে ধীরে সেই অবসাদ কাটিয়ে উঠে কাজে ফেরেন। কেরিয়ারের শীর্ষে থাকাকালীন কেন হঠাৎ করে আত্মহত্যা করবেন আকাঙ্খা? বিশ্বাস করতে পারছেন না অনুরাগী থেকে ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মীরা।
‘মেরি জং মেরা ফয়সলা’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে ভোজপুরি এই অভিনেত্রীর। তারপর ‘মুঝসে শাদি করোগি’, ‘বীরো কে বীর’, ‘ফাইটার কিং’, ‘কসম পয়দা করনে কি টু’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।