আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্তর নতুন ছবি ‘ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন কলকাতা’ ৭৮ তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা করে নিয়েছে। কংক্রিটের ভিড়ে ছোটবেলার চেনা শহর আর আমরা কেউ চিনতে পারি না। হারিয়ে ফেলেছি আমাদের প্রিয় বিষয় গুলো। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক বিক্রম আদিত্য সেনগুপ্ত এটি তৃতীয় ছবি। এর আগে তার ‘আসা যাওয়ার মাঝে’ এবং ‘জোনাকি’ যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছিল। দর্শক বুঝতে পেরেছে বিক্রম একটু অন্য ধরনের ছবি করতে অভ্যস্ত। তার সংলাপ ফিল্ম প্রথম ছবি আসা যাওয়ার মাঝে’ বিদেশেও সমাদৃত হয়েছে। তিলোত্তমা শহরই বিক্রমের এই ছবির গল্পের কেন্দ্রবিন্দু। কন্যা হারানো মা, এই ছবির চরিত্র ইলা পুরনো শহরে নিজের ছোটবেলাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। বিক্রমের কথায়, ‘ এই ছবির ধারণা আমার মাথায় এসেছিল প্রথম যখন দেখেছিলাম বছর পাঁচেক আগে আইকনিক সায়েন্স সিটির ডাইনোসরটির উপর ফ্লাইওভারটি নির্মাণ হচ্ছিল’। সদ্য কন্যা হারানো এক মাকে নিয়েই ছবির গল্প। মেয়েকে হারানোর পর মা হিসেবে শুধু নিজের পরিচয় হারাননি তার স্বামীর একমাত্র অবলম্বনও হয়ে উঠেছেন। ইলার অফিসের বস তার থেকে অ্যাডভান্টেজ নেয়। ইলার সাত ভাই তাদের পারিবারিক থিয়েটারের মালিকানার অংশীদার করতে অস্বীকার করে। ইলার কাছে আসতে আসতে শহরটা অচেনা অন্ধকারময় হয়ে ওঠে। এই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ইলা তার শৈশবের স্মৃতির কাছে আশ্রয় নেয়। এই শহরের পুরনো শৈশবের স্মৃতি তাকে নতুন সূচনার আশা যোগায়।
বিক্রমের কথায় ছবিটি বিস্তৃত মহানগরীতে হাঁপিয়ে ওঠা মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও সংগ্রামকে তুলে ধরার চেষ্টা। ছবিতে ছবিতে বাম অর্থাৎ কমিউনিস্ট শহরের বিভিন্ন স্তরকে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। যা হয়তো কিছুটা বেদনাদায়ক। কিন্তু তবুও তাতে একটা আশার আলো ছিল। দ্রুত পরিবর্তিত বিশ্বের দিকে তাকানোর চেষ্টা করা হয়েছে এই ছবির মধ্যে দিয়ে।
বিক্রমের এই তৃতীয় ছবিতে অভিনয় করেছেন শ্রীলেখা মিত্র, ব্রাত্য বসু, সত্রাজিত সরকার, অরিন্দম ঘোষ, রিতিকা নন্দিনী শিমু, অনির্বাণ চক্রবর্তী, নবাগত শায়ক রায়। এছাড়া পরিচালক আদিত্যর বাবা ত্রিদিব সেনগুপ্ত রয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে।