১৯৫৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল কমেডি ছবি ‘সাড়ে ৭৪’ , দর্শকরা নামজাদা অভিনেতার মাঝেই আবিষ্কার করলো নতুন জুটি, উত্তম-সুচিত্রাকে। ছবিটি বক্স অফিস কাঁপিয়ে দিল। এর পর উত্তম কুমার হয়ে উঠল বাংলা ছবির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। একের পর এক ছবি বক্স অফিস রেকর্ডে উত্তম পেলেন কালজয়ী সাফল্য, সৃষ্টি হল বাংলা চলচ্চিত্রের নতুন যুগ। সেই কারনেই সত্যজিৎ রায় ‘নায়ক’ ছবির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন উত্তম কুমারকে ভেবেই। যে ছবি আজও আপামর বাঙালির কাছে কাল্ট সিনেমা হয়ে রয়ে গেছে।১৯৭০ এর পর নায়ক উত্তম হয়ে উঠলেন মহা নায়ক উত্তম কুমার। যুগের পর যুগ ধরে দর্শকদের মোহাবিষ্ট করে পৌঁছে গেলেন অনন্য উচ্চতায়।অনাবিল হাসি, অকৃত্রিম চাহনি আর অভিনয় গুনে কয়েক প্রজন্ম পেরিয়ে আজও বাঙালির চেতনায় উত্তম জীবন্ত।
আরও পড়ুন: ‘শেষ পাতা’র যাত্রা শুরু
তবে মহানায়ক উত্তম কুমারের উত্থান পর্ব খুব সহজ ছিলনা অভিনয় জীবনের প্রথমে তিনি ছবিতে এক্সট্রার চরিত্রে অভিনয় দিয়ে শুরু করেছিলেন।১৯৪৭ সালে হিন্দি ছবি ‘মায়াডোর’ মাত্র পাঁচ সিকিতে এক্সট্রার রোলে তাঁকে দেখা যায়। এর পর দৃষ্টিদান,কামনা ছবিতে ছোট ছোট চরিত্র করেছিলেন। তবে সেবার ছবি বক্স অফিসে চলেনি। তবে ছবি না চললেও তিনি সুযোগ পেতে থাকলেন।
এর পরও অরুণ নামে তাঁর বেশকিছু ছবি ফ্লপ হয়। টলিপাড়ায় তখন তাঁকে ফ্লপ মাস্টার জেনারেল নামে পরিচিত হতে থাকলেন। কিন্ত এর পরও তিনি দমে জাননি, অদম্য জেদ আর একাগ্রচিত্তে অভিনয় করে গেছেন। এর পর অভিনেতা পাহাড়ি সান্যাল পরামর্শে নাম বদলে হলে উত্তম কুমার। ‘বসু পরিবার ‘ ছবিতে নায়কের চরিত্রে অভিনয় না করলেও দর্শকদের চোখে পড়েন তিনি। তাঁর অভিনয়ে হলিউডের ছবির অভিনেতাদের প্রভাব দেখা যায়, ধীরে ধীরে নিজে অভিনয়ের স্টাইলে দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করলেন মহানায়ক। পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে সকলকে মোহাচ্ছন্ন করে রাখলেন তাঁর কিলার লুক দিয়ে।বাংলা ছবির চির নবিন নায়ক উত্তম কুমার জীবনের শেষ সিনেমা ‘ওগো বধূ সুন্দরী’র অভিনয়েও দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে রয়েছেন। তাঁর অকাল মৃত্যুর পরও চির সবুজ পথেহেঁটে চলেছেন বাঙালির প্রাণের নায়ক। প্রতি মুহূর্তে আছেন, থাকবেন অনন্তকাল।