ভারতে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এসেছে অনেক দিন হল। তবে একথা অস্বীকারের কোনও উপায় নেই যে, করোনা কালে ওটিটি-র জনপ্রিয়তা বেড়েছে চড়চড় করে। ওয়েব প্ল্যাটফর্মের অন্য রকম ভাবনার ছবি চোখে পড়ার মতো। খেয়াল করলে দেখা যাবে ওটিটি-র জন্য তৈরি বেশির ভাগ ছবি বা সিরিজই অনেক ক্ষেত্রেই নারী নির্ভর। সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হাসিন দিলরুবা’ই হোক বা ‘মহারানি’- তাপসী পান্নু, হুমা কুরেশির দিক থেকে চোখ ফেরানো দায় হয়েছে। কাহিনি পুরোটাই তাঁদের কেন্দ্র করে লেখা। গল্পও এগিয়েছে তেমন ভাবেই। আর একটু পিছনে তাকালে ‘পাগলেটে’র সানায়া মালহোত্রা বা কৃতি কুলহারির ‘শাদিস্থান’ সমস্ত গল্পের কেন্দ্রেই নারী চরিত্র। বলা যেতে পারে ‘ফোর মোর শটস্ প্লিজ’-এর কথাও।স্বাধীন চার নারীর জীবন, তাদের পেশা, তাদের পছন্দ- অপছন্দ- দারুণ নজর কেড়েছিল গল্প ।সদ্যই মুক্তি পেয়েছে বড় পর্দার সুলু ওরফে বিদ্যা বালনের ‘শেরনি’। সেখানেও ম্যাজিক করেছেন বিদ্যাই, ছবির আসল শেরনি তো তিনিই। আসলে এই মুহূর্তে ওটিটি-র শেরনি নারী চরিত্ররাই।
ওটিটি এবং বড়পর্দার সিনেমার বিষয়বস্তুর নিয়ে আলোচনা করতে গেলে দেখা যাবে, পর্দায় ছবি মুক্তিতে অনেক রকম বাধানিষেধ থাকে, থাকে সেন্সর বোর্ডের কাঁচির শাসানি। ওয়েব প্ল্যাটফর্ম এখনও সে হিসাবে খানিকটা স্বাধীন। আর তাই সেখানে নারী কেন্দ্রিক গল্প শোনাতে পিছপা হচ্ছেন না স্বাধীন পরিচালকরা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নারীরাই এখন কাহিনির কেন্দ্রে, তাঁদের হাতেই শক্তি, গল্প কেমন করে এগোবে, তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেন। এমন ধরণের গল্প দেখতে পছন্দ করছেন দর্শকরাও। তাঁদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই ওটিটি-তে একের পর এক ধামাকাদার নারী চরিত্র নিয়ে হাজির হচ্ছেন পরিচালকরা। ওটিটি-তে ছবি মু্ক্তির আরও একটা সুবিধে হল, এখানে বক্সঅফিসের খাঁড়া মাথার ওপর ঝোলে না। অনেকটাই স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ পান পরিচালকরা। তেমনটা করতে গিয়ে নির্মিতারাও বেশ বুঝতে পারছেন নারীকে কেন্দ্রে রেখে ছবি বানালে দর্শক তা পছন্দ করছেন। নারীর চোখ দিয়ে সমাজের গল্প দেখাচ্ছেন পরিচালকরা। কখনও সে গল্প ‘পাগলেটে’র মতো কোনও এক সদ্য বিধবা নারীর, কখনও ফরেস্ট অফিসার বিদ্যার গল্প, কখনও ‘মহারানি’র গ্রাম্য- অশিক্ষিত রাজনীতিবিদ হুমা কুরেশির গল্প। সবটাই উপভোগ করছেন দর্শক। বুকে বল পাচ্ছেন নির্মাতারা। ওয়েবে হইহই করে সফল হচ্ছে গার্লস পাওয়ার।