অনেকেই জানেন না মৃণাল সেনের জীবনের প্রথম ছবি উত্তমকুমারকে নিয়ে তৈরি করেছিলেন। ছবির নাম ছিল ‘রাতভোর’। ছবিতে উত্তমকুমার ছাড়াও ছিলেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, ছবি বিশ্বাস,ছায়াদেবী প্রমূখ। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ১৯৫৫ সালে তৈরি মৃণালবাবুর এই ছবিটি মুক্তি পায়নি।
মৃণাল সেনের পরিচালনায় কাজ করেছিলেন অপর্ণা সেন ও গিরিশ কারনাড। তেরোটি শর্ট ফিল্ম তৈরি করেছিলেন একসময় মৃণাল সেন। প্রত্যেকটির দৈর্ঘ্য ২৩ মিনিট। এই সিরিজটি নাম ছিল ‘কভি দূর কভি পাস’।হিন্দি ভাষায় তৈরি এই সিরিজটি নারী-পুরুষের সূক্ষ্ম সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল।দূরদর্শনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল এটি ১৯৮৬-৮৭ সালে। দূরদর্শনে সপ্তাহে একটি করে এপিসোড সম্প্রচারিত হয়েছিল। অনেক সাধারণ দর্শকেরই সে এ কথা অজানা। ছবির সংগীত পরিচালনা করেছিলেন অঞ্জন দত্ত।
মেগা সিরিয়ালের ধারণা তখনও ভারতীয় দর্শকদের ছিল না।সেই সময় বিখ্যাত চিত্রপরিচালকরা ডকুমেন্টারি কিংবা শর্ট ফিল্ম করতেন। সে সবই দেখানো হতো দূরদর্শনের পর্দায়। শর্ট ফিল্মগুলি ছিল কলকাতা দূরদর্শনের কাছে। সেগুলি প্রাথমিক সম্প্রচারের পর অরিজিনাল টেপগুলি হারিয়ে যায়। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃণাল-পুত্র কুণাল সে খবর জানিয়ে একটি পোস্ট করেছেন। কুণাল সেন থাকেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই শর্ট ফিল্মগুলোর লো-রেসোলিউশন কপি মৃণালবাবু পাঠিয়েছিলেন তাঁর পুত্রকে। এই সব ছবির একটিতে অভিনয় করেছিলেন অপর্ণা সেন ও গিরিশ কারনাড। এই স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবিটির নাম ছিল ‘ দশ সাল বাদ’। শর্ট ফিল্মের লো-রেসোলিউশন ভার্সন কুণালবাবু তাঁর লেখার সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন।
তিনি লিখেছেন, তিনি জানেন না কোনও কপিরাইট সমস্যায় তিনি পড়বেন কি না। কেউ যদি কপিরাইট সংক্রান্ত কোনও ডকুমেন্ট তাঁকে দেখাতে পারেন তবে তিনি শর্ট ফিল্মের ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরিয়ে নেবেন।
আদ্যোপান্ত নারী-পুরুষের সম্পর্ক নিয়ে মৃণালবাবু তাঁর চলচ্চিত্র জীবনে তেমন একটা ছবি তৈরি করেননি। এই ছবি দেখার সুযোগ সাধারণ দর্শকরা পাবেন কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তবে এই সিরিজে মৃণাল সেনকে দর্শকরা একেবারে অন্য ধরনের পরিচালক হিসেবে আবিষ্কার করতে পারবেন বলে কুণালবাবু ধারণা