মহামারি, সংক্রমণের ঢেউ এসবেই থমকে গেছে বিনোদন। মাল্টিপ্লেক্স বা সিঙ্গল স্ক্রিন নয়, বিনোদন এখন অনেকটাই মুঠোফোনবন্দি। আর তাই ছবি মুক্তিতে কমতি নেই মোটেই। একের পর এক ছবি মুক্তি পেয়ে চলেছে অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে।
২০২১- এ মুক্তি পেয়েছে ‘রুহি’। আশ্চর্যের কথা ছবি নিয়ে প্রথম থেকে অনেক আশা থাকলেও কার্যকালে ‘রুহি’ দেখে অনেকেরই মনে হয়েছে অমর কৌশিকের ‘স্ত্রী’-এর সঙ্গে রুহির অনেকটাই মিল। রাজকুমার রাও-এর মতো অভিনেতারও এত দুর্বল স্ক্রিপ্টে বিশেষ কিছু করার ছিল না, বলছে ওয়াকিবহাল মহল। এই বছরই মুক্তি পেয়েছে ‘সর্দার কা গ্র্যান্ডসন’। ছবির কাহিনিতে লাহোর থেকে অমৃতসরে বাড়ি সরিয়ে আনার জন্য যতটা পরিশ্রম করা হয়েছে, গল্প লেখার সময় যদি তার এক শতাংশও করা হতো তবে ‘সর্দার কা গ্র্যান্ডসন’ হয়তো দর্শকের মনে ধরত। প্রত্যাশা ছিল ঋভু দাশগুপ্তের ‘দ্য গার্ল অন দ্য ট্রেন’ নিয়েও। তবে আশাপূরণে ব্যর্থ হল সেই ছবিও। পরিণীতি চোপড়ার অভিনয় সেভাবে মন তো কাড়লই না উপরন্তু কাহিনিও বেশ জোলো। প্রাপ্তি বলতে একমাত্র অদিতি রায় হায়দারি। বহু প্রতীক্ষার পর মুক্তি পেয়েছে সলমন খানের ‘রাধে :ইয়োর মোস্ট ওয়ান্টেড ভাই’। ‘রাধে’ নিয়ে সলমনভক্তদের মধ্যে কৌতূহল ছিলই। তবে ছবি দেখে কারুরই সেভাবে মন ভরল না। সমালোচকরা তো বটেই ছবি দেখে হতাশ ভাইজানের ভক্তরাও। প্রথমে ওটিটি রিলিজের পর মহারাষ্ট্রের গুটিকতক হলেও মুক্তি পেয়েছিল ‘রাধে’। তবে তাতে দর্শকের মনোভাবে কোনও পরিবর্তন আসেনি। মুক্তির পর ২০২১-এ এখনও পর্যন্ত যে কটি ছবি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে সেগুলো সবকটিই এক হিসাবে মুখ থুবড়েই পড়েছে।
মহামারির কালে বিনোদন এবং বক্সঅফিসের হিসাবনিকেশ বদলে গেলেও দর্শকের পছন্দ যে বদলায়নি তা কিন্তু ভালই বোঝা যাচ্ছে। মুঠোফোনে বিনোদন এসে যাওয়ায় বিদেশের ওয়েব সিরিজও এখন হাতের নাগালে। বিদেশি ওয়েব সিরিজের সমমানের কাজ দেখতে চাইছেন অনেকেই। তাতেই ঘটছে বিপত্তি। কাজেই দর্শক ধরে রাখতে ছবির কাহিনি, চিত্রনাট্য, অভিনয় থেকে শুরু করে কারিগরি বিভাগ সবটারই উন্নতি জরুরি। গাঁজাখুরি গল্পে যে আর খুব বেশি দিন দর্শক ভুলিয়ে রাখা যাবে না- তা ছবির নির্মাতারা যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন ততই লাভবান হবেন।