ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে কারোর ফেসবুক পোস্ট ছিল আবার বছর দুই পরে স্টেজে।কারোর বা মাচায় ফেরার উচ্ছাস ফেটে পড়ছিলো গ্রুফিতে। কেউ বা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিলো যে আবার উপার্জন শুরু হলে এই ভাবনায়। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই অনুপম রায়, রূপঙ্কর, লোপামুদ্রাদের মাথায় হাত। আবার সে এসেছে ফিরিয়া। কঠোর বিধিনিষেধ এবং ভাইরাসের উপুর্যুপরি আক্রমণে দিশাহারা সংগীতজগৎ। একের পর এক মেলা, সংগীত অনুষ্ঠান বাতিল। কবে হবে তার ঠিক নেই। আবার ২০২০ এর মাঝামাঝি সময়ের বিভীষিকা।ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে চুটিয়ে শো করেছেন অনুপম রায়. লোপামুদ্রা তার দলবল নিয়ে গেছিলেন বিভিন্ন জেলায়। বছর দশেক পর লক্ষ্মীছাড়া ব্যান্ড আবার এক ছাতার তলায় এসে দেশপ্রিয় পার্ক মাতিয়েছে। সিধু, অনিন্দ্য, পটা আবার একসঙ্গে ঘাম ঝরিয়েছেন বাগুইআটির এক অনুষ্ঠানে। রূপঙ্কর আবারও বৌদিমনি কে সঙ্গে নিয়ে স্টেজে উঠেছেন। কিন্তু এখন ওমিক্রন এর ঠেলায় সকলের মুখেই এ তুমি কেমন তুমি।
রূপঙ্কর জানিয়েছেন, এভাবে চললে সর্বনাশের দিন খুব সামনেই। বেশিরভাগ শিল্পীই অন্য কোনো বিকল্প পেশা বেছে নেবে। অথবা আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। আর এক প্রথম সারির শিল্পী জানালেন যে মূলত গায়ক গায়িকাদের মানুষ চেনেন, জানেন। তাদের একটা নির্দিষ্ট জীবনযাপনের মান রয়েছে। কিন্তু যারা সাউন্ড করেন বা সহশিল্পী তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। একটা গোটা পরিবার হয়তো তাদের রোজগারের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এখন এই আতঙ্ক এবং বিধিনিষেধ বাধ্য করবে তাদের সংগীতচর্চা থেকে সরে যেতে। এমনকি সুদিন ফিরলেও এই মানুষগুলো আর হয়তো এই অনিশ্চিত পেশার দিকে পা বাড়াবেন না। কেউ হয়তো মুদির দোকান দেবেন, কেউ বা মাছ বা সবজি বিক্রি করবেন। প্রথমবার হয়তো তাও টিকে থাকা সম্ভব হয়েছিল কিন্তু এখন আর সেই সুযোগটুকুও রইলো না.
গত ২রা জানুয়ারী পৃথিবী ব্যান্ড এর শো কোনোমতে হয়েছে. কিন্তু আগামী ৯ই জানুয়ারী ফসিল্স এর বিশ বাউ জলে। ডোভার লেন সম্মেলন ইতিমধ্যেই বাতিল হয়ে গেছে। বেহালা সংগীত সম্মেলন ও শেষমুহূর্তে বাতিল। এছাড়াও মাস জুড়ে সমস্ত শো বাতিল হয়েছে লোপামুদ্রা, সোমলতা, রূপঙ্কর, অনুপমদের। বাতিল মালদা বইমেলা থেকে দম দম এর কল্পতরু মেলা।
এখন অপেক্ষা কবে আবার উজ্জ্বল দিন, রঙিন স্বপ্নের মুহূর্ত ফিরে আসে।