বিস্ময়ের অন্য নাম অবশ্যই উত্তম কুমার। পঁচানব্বইতম জন্মদিনেও তিনি সমান প্রাসঙ্গিক। সাধারণ দর্শক থেকে সিনেমার জগতের তারকাদের চোখে তিনি আজও চর্চিত চরিত্র। শুধুমাত্র জন্ম বা মৃত্যুদিন নয়, মহানায়ক উত্তম কুমার প্রতিক্ষন সকলের মনে প্রানে রয়েছে। দশকের পর দশক ধরে অভিনেতা থেকে পরিচালককে উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন তিনি। আজও তাঁর নায়িকারা তাঁর স্মৃতি রোমন্থণ করেন। অভিনেতা উত্তম কুমারের পাশাপাশি মানুষ উত্তম কুমারের পরিচয় উঠে আসে।
আরও পড়ুন : নন্দনের জন্মদিন
অভিনেত্রী লিলি চক্রবর্তীর মতে, অভিনেতা হিসেবে তিনি তো ভালো ছিলেনই, তবে মানুষ উত্তম এরও জুড়ি মেলা ভার। একবার তিনি জড়দা পান খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, উত্তম বাবু তখন তাঁকে বিশ্রাম দিয়ে নিজের শট গুলো দিয়েছিলেন। সব দিকে তাঁর নজর থাকতো। লিলি চক্রবর্তী আরো জানান, তাঁকে বিমান বলে ডাকতেন।
অভিনেতা চিরঞ্জীত চক্রবর্তীর মতে উত্তম সর্বোত্তম, উত্তম কুমারের যায়গা কেউ নিতে পারেনি, ভবিষ্যতেও সম্ভব নয়।
সিনেমার পর্দাতেই উত্তম ক্যারিশ্মা সীমাবদ্ধ থাকেনি, বাস্তবে ব্যক্তি উত্তমেও মুগ্ধ হয়েছেন, যাঁরা তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছিলেন ।শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের মতে দুবার তিনি দেখা করার সুযোগ পেয়েছিলেন, উত্তম বাবুর হাসির জাদু আজ তিনি বুঝতে পারেন। দ্বিতীয় বার যখন দেখা হয় তখন হিন্দি ছবি করতে গিয়ে খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন উত্তম কুমার, সেটা দেখে মোটেও ভালো লাগেনি শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের। পরিচালক গৌতম ঘোষের আফসোস উত্তম কুমারের সঙ্গে কাজের সুযোগটা হারিয়েছিলেন তিনি। উত্তম কুমারের অকাল প্রয়াণের কারনেই চিত্রনাট্য পছন্দ হওয়ার সত্ত্বেও ছবি করা হয়নি।পরিচালক সন্দীপ রায়ের মতে ,” আজও আমি আটকে যাই যখন টিভিতে উত্তম কুমারের কোন সিনেমা চলে, এমনই ক্যারিশ্মা তাঁর। “
বাঙালির ম্যাটিনি আইডল উত্তম কুমারের সপ্তপদী, নায়ক, চৌরঙ্গী, অ্যান্টনি ফিরিস্তি আরো অসংখ্য ছবিতে যেমন দর্শকদের মোহিত করে রেখেছেন তেমনি বয়সের সঙ্গে সঙ্গেই মৌচাক, প্রতিশোধ, চিড়িয়াখানা, সব্যসাচী, ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ র মতো বহু ছবিতে অন্য ধারায় নিজের অভিনয়কে ভেঙে-গড়ে দর্শকদের মনোরঞ্জন করেছেন।
অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ” উত্তম জেঠু আমার কাছে ইনস্টিটিউশন, ওর সান্নিধ্য আমার কাছে আশীর্বাদ। ” আজও উত্তম ভাবনায় মজে আপামর বাঙালি।