কলকাতা: SSC গ্রুপ-ডি(SSC Group D Recruitment case) নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তে স্থগিতাদেশ হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের (SSC Calcutta High Court) ৷ বুধবার মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের তীব্র বিরোধিতা করেন ৷ দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর মামলায় সিবিআই তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ ৩ সপ্তাহের জন্য সিবিআই তদন্তে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয় ৷ পাশাপাশি, নির্দেশ দেওয়া হয় কোনও নথিই সিবিআইয়ের কাছে পাঠানো হবে না ৷ আগেই মতোই সব নথি হাই কোর্টের কাছেই থাকবে ৷ আগামী সোমবার মামলার পর্ববর্তী শুনানি ৷
স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি-র নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ । সুপারিশে গ্রুপ ডি পদে ৫০০ জনের নিয়োগ হয়েছে, তা নিয়ে এসএসসি ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের চাপানউতরের জেরে সোমবার সিবিআইকে (SSC CBI) তা অনুসন্ধানের ভার দেন সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। আপাতত তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে ৷
এ দিনের শুনানির শুরুতেই গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের তীব্র বিরোধিতা করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় । তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার চায় এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত হোক । প্রাক্তন বিচারপতি দ্বারা কমিটি গঠন করে পুরো বিষটির তদন্ত করার পক্ষে রাজ্য সরকার ৷” এর পরই বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন পাল্টা প্রশ্ন করেন, “গ্রুপ ডি নিয়োগে সিবিআই তদন্ত করলে সরকারের সমস্যা কোথায় ?”
আরও পড়ুন – টেট পরীক্ষার ফল প্রকাশের দাবিতে বিক্ষোভ সল্টলেকে
অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, “উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরির ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে পারতেন, কিন্তু দেননি ৷ তাছাড়া, গ্রুপ ডি মামলায় কোনও পুলিসি অভিযোগ হয়নি। রাজ্যের দক্ষ পুলিস অধিকারিক থাকা সত্বেও রাজ্যের উপর আস্থা রাখা হয়নি। মামলায় সিবিআই তদন্তের কোনও প্রয়োজন ছিল না। নজিরবিহীন ঘটনায় সিবিআই তদন্ত করে। সিবিআইয়ের মত পুলিসও স্বাধীন সংস্থা। কোনওটাই পলিটিক্যাল কন্ট্রোল বলা যায় না ৷”
অ্যাডভোকেট জেনারেলের যুক্তি মানলেও নিয়োগের নিয়ম নিয়ে তোপ দাগে আদালত ৷ বিচারপতি বলেন, “রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশ ছাড়া কিভাবে নিয়োগ সম্ভব? এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা সুপারিশ ছাড়া কিভাবে এতগুলো নিয়োগ হল । এ ভাবেই দীর্ঘ সওয়াল জবাবের পর আপাতত স্থগিতাদেশ দেওয়া হয় ৷
স্থগিতাদেশের পাশাপাশি, আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঘোষণা করা হয়েছে ৷ নিয়োগ বিতর্কের তদন্ত আগমী দিন কোনও পথে হবে, সেই রূপরেখা ঠিক করতেই এই শুনানি ৷ অর্থাৎ, আগামী দিনে তদন্তের বিষয়ে সিট গঠন করা হবে কি না, বা কোনও বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে, নাকি কোনও শেষ পর্যন্ত সিবিআই তদন্তের পথেই এগোবে আদালত, এই বিষয়টা নিশ্চিত করতেই শুনানি হওয়ার কথা ৷