আমরা প্রতিদিনই কিছু না কিছু শিখি। কখনও ঠেকে শিখি আবার কখনও ঠকে শিখি। শিক্ষানবিশি চলতেই থাকে। কিছু শেখা পরবর্তী ক্ষেত্রে আমাদের কাজে আসে আবার কিছু আসে না। তখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে মনে হয় ধুস্ আমার দ্বারা কিছুই শেখা হল না।
আজ ৫ সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবস। হামাগুড়ি দেওয়া থেকে অক্ষর চেনা যাঁদের হাত ধরে আজ তাঁদের দিন। আর বাবা- মা আমাদের জীবনের প্রথম শিক্ষক। আমরা ঋদ্ধ হতে থাকি তাঁদের স্নেহ, প্রশ্রয়, শিক্ষায়। চরিত্র গঠন হয় আমাদের। ছোট থেকেই প্রতিটা আচরণ আমরা কীভাবে করব, তার বহিঃপ্রকাশ কীভাবে হবে, কোনটা উচিত, অনুচিত, তাঁদের মধ্যে দিয়েই আমরা শিখেছি। তাই আজ সবার আগে তাঁদের প্রণাম জানানোর দিন।
আরও পড়ুন : কাহিনিতে দেশের শিক্ষা পরিকাঠামো?
আজ ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মজয়ন্তী। আজকের দিনটি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন দিনে পালন করা হয়ে থাকে। অধিকাংশ দেশেই ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়। কানাডা, জার্মানি, ইংল্যান্ড, বুলগেরিয়া, রাশিয়ার মতো বিশ্বের মোট ১৯টি দেশে ৫ অক্টোবর পালিত হয় শিক্ষক দিবস। আবার বিশ্বের অন্য ১১ টি দেশে ২৮ ফেব্রুয়ারি পালিত হয় বিশ্ব শিক্ষক দিবস। মরক্কো, আলজেরিয়া, ইজিপ্টের মতো দেশে পালিত হয় ২৮ ফেব্রুয়ারি। এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল মনে করে, জাতীয় স্তরে সমগ্র বিশ্বে এই দিনটিকে স্বীকৃতি দেওয়া জরুরি।
আরও পড়ুন : কো-এডুকেশনে ফতোয়া তালিবানের, উচ্চশিক্ষায় বঞ্চিত হবেন মেয়েরা
সাল ১৯৬২। ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন। শোনা যায়, ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিন তাঁর কিছু প্রিয় ছাত্র, অধ্যাপক পালন করতে গেলে তিনি বলেন, পৃথকভাবে জন্মদিন পালন না করে, দিনটি যদি দেশের সমস্ত শিক্ষকের উদ্দেশে পালন করা হয় তা হলে তিনি গর্বিত হবেন। আগামী জীবনযাত্রায় সৎ নাগরিক গড়ে তোলার জন্য একজন শিক্ষকই কারিগর। শিক্ষক দিবস মানেই পড়ুয়া আর শিক্ষক সম্পর্ক দৃঢ় করার দিন। একটা ক্লাস রুম, একটা ব্ল্যাকবোর্ড, একটা চক, একটা ডাস্টার, একটা নাম ডাকার খাতা। সবমিলিয়ে স্কুল। ছাত্র-ছাত্রীর পড়া না করা, শিক্ষক-শিক্ষিকার বকুনি ভালোবাসা সবটুকু নিয়েই সম্পর্ক তৈরি হয়।
আরও পড়ুন : নজরে শিক্ষার ‘বিশ্বায়ন’, সিলেবাস পরিবর্তনের ভাবনা রাজ্যের
আজ সবটাই একটা স্ক্রিনে বন্দি। হয়তো বকুনি আছে, হয়তো ছাত্র-ছাত্রীর পড়া না-পাড়া আছে। কিন্তু তার সবটাই অনলাইন। আজ আর সেই কান মুলে দেওয়ার বালাই নেই। হরি ঘোষের গোয়ালের মতন ছাত্র-ছাত্রীদের খাওয়ানোর বালাইও নেই। সবটুকুই আজ অনলাইনে বন্দি।
তবুও আশায় বুক বাঁধছে শিক্ষক থেকে ছাত্র-ছাত্রী সকলে। আবার সুদিন আসবে। আলো জ্বলবে ক্লাসরুমে। ভরে উঠবে বেঞ্চ। চিৎকার থামাতে শোনা যাবে ডাস্টারের আওয়াজ।