বহরমপুর/পুরুলিয়া/বর্ধমান: দেশজুড়ে আজ সোমবার ভারত বনধের ডাক দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি৷ তাতে শামিল হল না মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ীরা৷ বনধ উপেক্ষা করে সকাল থেকে দিব্যি দোকানপাট খুলে বসেছেন তাঁরা৷ দোকান খোলা থাকায় রাস্তায় নেমেছে মানুষ৷ চলছে কেনা-বেচা৷ সবজি বাজার থেকে মুদির দোকান- সব জায়গাতেই ক্রেতাদের ভিড়৷ ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, সংসার চালাতে সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন বনধ সমর্থন করে ঘরে বসে থাকা সম্ভব নয়৷
আরও পড়ুন: ভারত বনধের সমর্থনে দাঁতনে বামপন্থীদের রেল অবরোধ
করোনার জন্য গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবসা বন্ধ ছিল৷ তখন ব্যবসায় চরম মন্দা দেখা দিয়েছিল৷ সবচেয়ে অবস্থা খারাপ হয় ছোট এবং প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের৷ এখন করোনার প্রভাব কমেছে৷ আগের মত স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে জনজীবন৷ তাই একটু একটু করে কাটছে ব্যবসার মন্দা৷ তার উপর সামনেই পুজোর মরশুম৷ এই সময় বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে যায়৷ তাই বনধের জন্য ১০ ঘণ্টাও দোকান বন্ধ রাখতে নারাজ ব্যবসায়ীরা৷ স্থানীয় এক দোকানদার জানিয়েছেন, বাজার এখনও খারাপ৷ যাও বা জিনিসপত্র বিক্রি হচ্ছে বনধের দিন দোকান বন্ধ রেখে সেটা হারাতে চাই না৷
বনধ উপেক্ষা করে রাস্তায় মানুষ৷ সোমবার৷ নিজস্ব চিত্র৷
মুর্শিদাবাদ জেলার সাংসদ অধীর চৌধুরী নৈতিক কারণে বনধকে সমর্থন করেছেন৷ বাম নেতৃত্বের বক্তব্য, নিজেদের স্বার্থে ব্যবসায়ীদের দোকান রাখা উচিত৷ তবে কাউকে জোর করা হবে না৷ কিন্তু মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী সমিতি জানিয়ে দিয়েছে, প্রায় দু’বছর ব্যবসা বন্ধ ছিল৷ গতবার নমো নমো করে পুজো হয়েছে৷ করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দোকান খুলে বসেছেন ব্যবসায়ীরা৷ ফলে বনধ সমর্থন করার সম্ভব নয়৷ সব বস্ত্র প্রতিষ্ঠান খোলা হবে৷ তবে গণ্ডগোলের আশঙ্কায় লোকাল বাস কম চলছে৷ সরকারি বাস চলছে পুরোদমে৷ চলছে ট্রেনও৷
আরও পড়ুন: বনধের মিশ্র প্রভাব জেলাগুলিতে
পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে চলছে বাস৷ সোমবার৷ নিজস্ব চিত্র৷
মুর্শিদাবাদের মত বনধের তেমন প্রভাব পড়েনি পুরুলিয়া ও বর্ধমানের কাটোয়া শহরে৷ আজ সকাল থেকে পুরুলিয়া জনজীবন ছিল স্বাভাবিক৷ বেসরকারি বাস পথে না নামলেও সরকারি সব রুটেই বাস চলছে৷ শহরে বড় হাটে অন্যান্য দিনের মত বেচা-কেনা চলছে৷ তবে জেলার ঝালদা শহরে বনধ সমর্থনকারীদের বিরুদ্ধে জোর করে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে৷ সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, ‘আমরা বনধকে সফল করার জন্য কয়েকদিন ধরেই জেলার বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করেছিলাম। মানুষ আমাদের এই বনধকে সমর্থন করবে। জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে বনধের খবর আসছে৷’
বনধের দিন চলছে ট্রেন৷ সোমবার৷ নিজস্ব চিত্র৷
কাটোয়া শহরেও বনধের দিনে রাস্তায় নেমেছে মানুষ৷ সকাল থেকে খুলেছে ছোটখাটো দোকানপাট৷ চলছে সরকারি বাস ও ট্রেন৷ তবে ব্যান্ডেল-কাটোয়া শাখার ভান্ডার টিকুরি স্টেশনে সিপিএম-সহ বিভিন্ন সংগঠন গুলির পক্ষ থেকে রেল অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ সাহা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অঞ্জু কর-সহ অন্যান্যরা৷
কাটোয়া-ব্যান্ডেল শাখার রেল অবরোধ৷ সোমবার৷ নিজস্ব চিত্র৷