ডুয়ার্স : সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষমেশ পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হল ডুয়ার্সের বিভিন্ন জঙ্গল। জঙ্গল খুলতেই ডুয়ার্সমুখী পর্যটকরা।পশ্চিমবঙ্গে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব পড়তেই চলতি বছরের ৪ মে থেকে ডুয়ার্সের জঙ্গল পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রতিবছর বর্ষাকালে দু’মাস বন্য জন্তুদের প্রজননের জন্য জঙ্গল বন্ধ রাখা হয়। এইভাবে একটানা সাড়ে ৪ মাস জঙ্গল বন্ধ ছিল। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছর ১৫ সেপ্টেম্বর জঙ্গল খুলে দেওয়া হয়। তবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এবছর জঙ্গল খোলা হবে কিনা সেই নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। পর্যটকরাও ছিলেন দ্বিধাগ্রস্থ। বিগত দেড় বছর ধরে করোনা অতিমারীর জন্য সরকারি বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল। যার ফলে পর্যটন ব্যবসার অবস্থা খুবই শোচনীয় হয়ে যায়। ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়ীরা আশা করেছিলেন, এবারও হয়তো সঠিক সময়ে খুলে যাবে জঙ্গল। তবে জঙ্গল খোলার দিন এগিয়ে আসলেও সেই সংক্রান্ত কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন : স্নান সেরে তৈরি কুনকি হাতির দল, ডুয়ার্সের বাসিন্দাদের চোখে ওরাই বিশ্বকর্মা
শেষমেষ জঙ্গল খোলার বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ায় নিশ্চিন্ত হয়েছেন জঙ্গলের গাইড থেকে শুরু করে জিপসি চালক এবং হোটেল ও রিসর্টের মালিকরা। জঙ্গল খোলার বিজ্ঞপ্তি জারির পরেই শুরু হয়েছে জঙ্গল সাফারির গাড়ি মেরামতের কাজ। ফের একবার গরুমারা, চাপড়ামারি, লাটাগুড়ি সহ একাধিক জঙ্গলের বুক চিড়ে ছুটবে গাঢ় সবুজ রঙের হুড খোলা গাড়ি। জঙ্গল খুললেও কিছু কোভিড বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। মাক্স ও স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক। রয়েছে আরও বেশ কিছু কোভিড গাইডলাইন। জঙ্গল খোলার খবর জানতে পেরেই বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ শুরু করছেন পর্যটকরা। কিছু পর্যটক এরই মধ্যে পৌঁছে গেছেন ডুয়ার্সের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে। সকাল থেকেই লাটাগুরি, গরুমারা, চাপরামারি সহ একাধিক জঙ্গলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছেন তাঁরা। ফের একবার জমে উঠেছে মূর্তি নদীর পাড়। হাসি ফুটেছে মূর্তি নদীর পার বরাবর খাবারের দোকানদারদের। সকাল থেকে মূর্তি নদী সংলগ্ন খাবারের দোকান গুলোর ব্যস্ততা চরমে। সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে পর্যটন ব্যবসায়ীরা ডুয়ার্সে আসা সকল পর্যটকদের সবরকম কোভিড বিধি মেনে চলার আবেদন জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন : ডুয়ার্সেও ভাইরাল ফিভারের প্রকোপ, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০০
এই বিষয়ে মূর্তি জিপসি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মজিদুল আলম জানান, “দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস ধরে জঙ্গল বন্ধ থাকায় পর্যটকরা আসছিলেন না। যার ফলে এই ব্যবসার সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত তারা ব্যাপক ভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে জঙ্গল খোলা ছাড়া আর কোনও রাস্তা ছিল না। আমাদের কথা ভেবে রাজ্যের বনমন্ত্রী জঙ্গল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমরা মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।”