টাকি: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একের পর এক পুরসভার দখল নিচ্ছে তৃণমূল৷ বীরভূমের পর এবার উত্তর ২৪ পরগনার টাকি পুরসভাতে ভোটের আগেই জয় হাসিল (TMC wins Taki Municipality) করে নিল শাসক দল৷ সাতটি ওয়ার্ডের বিরোধী প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল৷ ২৭ ফেব্রুয়ারি শুধু নিয়মরক্ষার ভোট হবে৷ বিরোধী প্রার্থীরা একবাক্যে মেনে নিয়েছেন, টাকিতে তৃণমূল ছাড়া আর অন্য কোনও দলের সংগঠন নেই৷ তাই শাসক দলের উন্নয়নের কাছে মাথা নত করে তাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন৷ অপরদিকে তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর শাহানুর মণ্ডল বলেন, ‘ওরা মানুষের সমর্থন হারিয়ে ফেলেছে৷ জিততে পারবে না৷ তাই মনোনয়ন তুলে নিয়েছে৷’
বসিরহাট মহকুমার টাকি পুরসভায় ওয়ার্ড সংখ্যাট ১৬টি৷ যার মধ্যে ১ থেকে ৭ নম্বর পর্যন্ত ওয়ার্ডে বিরোধীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন৷ ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘আমাদের এখানে সংগঠন খুবই দুর্বল৷ নেতৃত্ব দেওয়ার কেউ নেই৷ টাকি পুরসভার উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে মনোনয়নপত্র তুলে নিলাম৷’ ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী সুজয় ঘোষের একই বক্তব্য৷ তিনি বলেন, ‘সাংগঠনিকভাবে সিপিএম এখানে দুর্বল৷ সমর্থকরা বেরতে চাইছেন না৷ দিদির নেতৃত্বে টাকি পুরসভা আরও উন্নয়ন করুক৷ তাই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলাম৷’
২০২১-এর বিধানসভা ভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূল রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতা দখলের পরই ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে বিরোধীরা৷ বাংলায় সিপিএম-কংগ্রেসের সংগঠন সেই কবে থেকে দুর্বল৷ ১৯-এর লোকসভা ভোটের পর যাও বা বিজেপি বিরোধী দল উঠেছে এসেছিল, বিধানসভা ভোটের পর সেই বিজেপি গৃহযুদ্ধে জেরবার৷ তার উপর কলকাতা পুরসভা এবং কয়েকটি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে তৃণমূলের রেকর্ড মার্জিনে জয় বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের মনোবল তলানিতে গিয়ে ঠেকে৷ নীচু তলার কর্মীদের অনেকেই হয় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, নয়তো নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন৷
আরও পড়ুন: TMC National Executive: ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ বিতর্কে শেষ কথা বলবেন মমতাই
টাকি তৃণমূল কংগ্রেসের টাউন সভাপতি প্রদ্যুৎ দাস বলেন, ‘পুরসভার জয় এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা৷ টাকি এবার বিরোধীশূন্য হবে৷ যেভাবে এখানে উন্নয়ন হচ্ছে তাতে বিরোধীরা কোনও রাজনৈতিক ইস্যু খুঁজে পাচ্ছে না৷ মনোয়নপত্র প্রত্যাহার করেছে৷ যাঁরা দলে এসেছেন তাঁদের সঙ্গে নিয়ে টাকির উন্নয়নের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব৷’ টাকি পুরসভার কো-অর্ডিনেটর শাহানুর মণ্ডল বলেন, ‘বিরোধীরা সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে গিয়েছে৷ তার উপর ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে যেভাবে মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে পুনরায় ক্ষমতায় এনেছে তাতে বিরোধীরা মনের দিক থেকেও দুর্বল হয়ে পড়েছে৷ যারা তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন তাদেরকে এক সঙ্গে নিয়ে মানুষের কাজ করব৷ এই পুরসভাকে আরও বেশি উন্নত পুরসভা গড়ে তোলার চেষ্টা করব৷’