বোলপুর: লাগাতার ছাত্র বিক্ষোভের জেরে বৃহস্পতিবার অসুস্থ হয়ে পড়েন বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী । এমন অবস্থায় বিশ্বভারতীর নিজস্ব হাসপাতাল থেকে একটি মেডিক্যাল টিম উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আসে চিকিৎসার জন্য । সেই মেডিক্যাল টিমের চিকিৎসক ও নার্সদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। আন্দোলনে বাধা পেয়ে চিকিৎসা না করেই ফিরে যেতে হল মেডিকেল টিমকে। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী গত শুক্রবার থেকে তার নিজ বাসভবনে পড়ুয়াদের হাতে ঘেরাও হয়ে রয়েছেন। ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস।
আরও পড়ুন: ৬ ঘণ্টা পরে SSKM থেকে বাড়ি ফিরছেন মুকুল
এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার অসুস্থ হয়ে পড়েন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাঁর চিকিৎসার জন্য বিশ্বভারতীর নিজস্ব হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে একটি মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয় উপাচার্যের বাসভবনে। মেডিক্যাল টিমের ছিলেন দু’জন চিকিৎসক ডা. অনির্বান দাশগুপ্ত ও ডা. অনির্বান চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু উপাচার্যের বাড়িতে ঢুকতে গেলে আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁদের। আন্দোলনরত পড়ুয়াদের দাবি, মেডিক্যাল টিম উপাচার্যের বাড়িতে ঢুকলে পড়ুয়াদের একজন প্রতিনিধিও সঙ্গে যাবে। নয়ত ঢুকতে দেওয়া হবে না চিকিৎসক ও নার্সদের। এমন অবস্থায় বাধার মুখে পড়ে অবশেষে চিকিৎসা না করেই ফিরে যায় মেডিক্যাল টিমটি।
উপাচার্যের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ, ফিরে যাচ্ছেন চিকিৎসকেরা
পাশাপাশি আন্দোলনরত পড়ুয়ারা জানিয়েছে, যদি সত্যি সত্যিই উপাচার্য মহাশয় অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে আমরা তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। আজকের অসুস্থ হওয়ার ঘটনাটি উপাচার্যের সাজানো ‘সম্পূর্ণ নাটক’ বলেও দাবি করেন পড়ুয়ারা। আন্দোলনকারীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই এই পরিকল্পনা বলে দাবি তাঁদের।
অন্যদিকে, মেডিকেল টিমে চিকিৎসা করতে আসা ডাক্তার অরিন্দম চ্যাটার্জি জানান, ‘’বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী নিজের বাসভবনে ঘেরাও অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই সম্পূর্ণ মেডিক্যাল ইউনিটের সঙ্গে আমরা উপাচার্যকে চিকিৎসা করতে এসেছিলাম। কিন্তু পড়ুয়ারা ঢুকতে দিল না আমাদের। তাই বাধার মুখে পড়ে ফিরে যেতে হচ্ছে।‘’
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক নাকি অন্য কিছু, কুপার হাসপাতালে সিদ্ধার্থ শুক্লার ময়নাতদন্ত
যতদিন গড়াচ্ছে ততই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের আন্দোলনে ক্রমেই অশান্ত করছে শান্তিনিকেতনের পরিবেশ। কবে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরবে সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। কারণ, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে সমাধান পথে হাঁটছে না। পাল্টা কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা করেছে। আগামীকাল শুক্রবার সেই মামলার শুনানি। এখন আদালতের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা শান্তিনিকেতন।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করায় তিন পড়ুয়া সহ কয়েকজন অধ্যাপককে বহিষ্কার করা হয়। ওই তিন পড়ুয়ার বহিষ্কার প্রত্যাহারের দাবিতেই উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামেন পড়ুয়ারা। ঘেরাও করা হয় উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাসভবন।