শাসন: ফের তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বোমাবাজি (Shasan Bombing) শাসনে। মাছের ভেড়ি ও ঘেরি দখলের লড়াইয়ে একাধিক বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। চারজন তৃণমূল কর্মীর (TMC Clash) বাড়িতে বোমা মেরে জানালা, রান্নাঘর, ঘরের গ্রিল একেবারে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে পৌঁছেছে শাসন থানার পুলিস। শেখ জামিরুল হক নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তেহাটা ঘোষপাড়া বাঁশবাগান এলাকা থেকে প্রচুর বোমা উদ্ধার করে পুলিস। বোমা নিষ্ক্রিয় করতে বম্ব স্কোয়াডকে খবর দেওয়া হয়েছে। এলাকায় পুলিসের তল্লাশি অভিযান চলছে।
এই ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার সাধারণ মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, অতীতের একটি খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই বিবাদ। মূলত মাছের ভেড়ি ও ঘেরি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলার দখলদারি নিয়ে শাসকদলের দুই মাতব্বর গোষ্ঠীর লড়াইয়ে বোমাবাজি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রস্ত গ্রামবাসীরা বলেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে এখানেও কোনওদিন রামপুরহাটের বগটুইয়ের মতো ঘটনা ঘটা অস্বাভাবিক নয়।
স্থানীয় সূত্র জানা যায়,শাসনের তেহাটা ঘোষপাড়া গ্রামের বাসিন্দা প্রভাস ঘোষ, দিলীপ ঘোষ এবং সঞ্জিত ঘোষ, হাকিম মোড়লের বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চলে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা মোতালেব মোল্লা, গফফর আলির নেতৃত্বে দুষ্কৃতীরা এই তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
আক্রান্তরা জানিয়েছেন, মাছের ভেড়ির টাকা আত্মসাৎ অর্থাৎ মোতালেব, গফফর ও তাঁদের অনুগামীরা এই এলাকায় যে সমস্ত মাছের ভেড়ি রয়েছে সেখান থেকে তোলাবাজি করত। এই ভেড়ির টাকা আত্মসাৎ করাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে রাতভর বোমাবাজি করে।
উদ্ধার হওয়া বোমা
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শাসনের তেহাটা গ্রামে বছর তিনেক আগে রাজনৈতিক কারণে খুন হন আব্দুল সামাদ আলি। অভিযোগের তির ছিল তাঁরই ভাইপো মোতালেবের দিকে। তাঁকে গুলি করে খুন করার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে মোতালেব এলাকাছাড়া ছিল। বারবার স্থানীয় নেতৃত্বকে জানিয়েও ঘরে ফিরতে পারেননি। ফলে দ্বারস্থ হন হাইকোর্টের। হাইকোর্টের নির্দেশে মাস দুয়েক আগে মোতালেব বাড়ি ফেরেন। আর এই বাড়ি ফেরাকে কেন্দ্র করেই রাজনৈতিক পারদ চড়তে থাকে।
এ বিষয়ে মোতালেবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন তৃণমূলের অত্যাচারে তিনি বাড়িছাড়া। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে তাঁকে বাড়ি ঢোকার। কিন্তু তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির নেতৃত্বে এলাকায় বোমাবাজি করে তাঁর ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রশাসনকে বলব, সঠিকভাবে ঘটনার তদন্ত করতে।
আরও পড়ুন- Shantanu Thakur: মতুয়াদের বাসে হামলা, জখম ২, বুঝে নেওয়ার হুমকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনুর
তৃণমূল কর্মী প্রভাস ঘোষ এবং দিলীপ ঘোষ বলেন, প্রথমে দুষ্কৃতীরা এসে তাঁরা বাড়িতে আছেন কিনা তার খোঁজ নেয়। তাঁদের বাড়ির লোক বাড়িতে নেই বলে জানাতেই বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। আক্রান্তরা বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এলে তাঁদের ওখানেই প্রাণে মেরে দেওয়ার চেষ্টা করে। এমনকী হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাঁদের হুমকিও দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান তথা হাড়োয়া বিধানসভার বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলাম। একে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল বলতে তিনি নারাজ। কিছু দুষ্কৃতী রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে বদনাম করার জন্য। তারাই এই ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে তাঁর দাবি।