ঝাড়গ্রাম: অতিমারি থাবা বসাল জঙ্গলমহলের শারদোৎসবের মূল কারিগরদের ওপর। সামনে দুর্গাপুজো। তার আগে গনেশ পুজো দিয়ে শুরু হচ্ছে পুজোর মরশুম। পর পর চলবে পুজো। অতিমারির জেরে কিন্তু শালমহুয়ার দেশের মৃৎশিল্পীদের হাতে কাজ নেই। পেট চালানোই মুশকিল।
যাঁরা বিগ বাজেটের পুজো করতেন সেই সব উদ্যোক্তারাও পড়েছেন বিপাকে। করোনার জন্য বাজেট কাটছাট করে এবার পুজো করবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ফলে যাঁদের পুজোর জন্য বড় বড় প্রতিমার অর্ডার ছিল, তাঁরা ওসব বাদ দিয়ে ছোট ছোট প্রতিমা এনে কোনও রকমে পুজোটা সারতে চাইছেন।আর তাই তার প্রভাব পড়েছে এই উৎসবের মূল কারিগর মৃৎশিল্পী,ঢাকিদের ওপর। চরম বিপাকে পড়েছেন ঢাকি আর মৃৎশিল্পীরা। প্রতিবছর রথের দিন থেকেই বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিমা তৈরির বরাত দেওয়া হত মৃৎশিল্পীদের । কিন্তু এবছর হাতেগোনা দুএকটি সংগঠন ছাড়া এখনো পর্যন্ত কেউ প্রতিমা তৈরীর অর্ডার দেয়নি।
আরও পড়ুন: ডুয়ার্সের চা বাগানে খাঁচাবন্দি হল লেপার্ড
মূর্তি গড়ছেন শিল্পী
ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলার মৃৎশিল্পীরা ।ঝাড়গ্রামের নামী মৃৎশিল্পী শিবশঙ্কর সিংহ বলেন, ‘’ বিগত বছরগুলিতে এই সময় ফুরসৎ পেতেন না কারিগরেরা। প্রতিমা তৈরীতে সকলেই ব্যস্ত থাকতাম। কিন্তু গত বছর থেকেই দুর্গা প্রতিমা,গণেশ ঠাকুর, মনসা ঠাকুর ও কালী ঠাকুরের মূর্তি তৈরির সেভাবে অর্ডার আসেনি। হাতে গোনা দুই একটি গণেশ ঠাকুর তৈরির বরাত এসেছে । এতে সংসার চলবে কিভাবে? আমরা কি ভাবে বেঁচে থাকবো?এই নিয়ে আমরা বেশ চিন্তায় পড়েছি।‘’
আরও পড়ুন: রবিবার দেশের ১৫ টি রাজ্য থেকে মহাপঞ্চায়েতে যোগ দেবেন কৃষকেরা
তিনি আরও বলেন, ‘’রাজ্য সরকারের কাছে আমরা সরকারি সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মৃৎশিল্পীরা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কোনও সহযোগিতা কিংবা কোনও ভাতা পায় নি। যেখানে বিভিন্ন লোকশিল্পীরা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ভাতা পাচ্ছেন।অথচ মৃৎশিল্পীরা বঞ্চিত।‘’
যদিও কলকাতার মৃৎশিল্পীদের অনেক সুযোগ সুবিধে থাকলেও জঙ্গলমহলের শিল্পীরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত বলে দাবি তাঁর।
গতবছরও করোনার জেরে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল মৃৎশিল্পী ও ঢাকিদের। তবু তারা আশা করেছিল হয়তো আগামী বছরটা ভালোয় ভালোয় কাটবে। কিন্তু এবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় ফের অথৈ জলে পড়তে হলো শিল্পীদের।