দার্জিলিং: তামিলনাড়ুতে কপ্টার দুর্ঘটনায়(IAF Chopper Crashed) সিডিএস বিপিন রাওয়াতের (CDS Bipin Rawat) দেহরক্ষী সৎপাল রাইয়ের (Satpal Rai) শেষকৃত্য সম্পন্ন হল তাঁর জন্মভিটের গ্রামে। সোমবার সমস্ত রীতিনীতি মেনে গান স্যালুট (gun salute) দিয়ে বিদায় জানানো হয় পাহাড়ের এই বীরসন্তানকে।
এদিন সকালে সৎপাল রাইয়ের বাড়ি থেকে তাঁর নিথর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় অন্ত্যেষ্টির জন্য। সেখানে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক, পুলিস সুপার, শিলিগুড়ির প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌতম দেব, প্রাক্তন জিটিএ চেয়ারম্যান অনিত থাপাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। পাহাড়বাসী চোখের জলে শেষ বিদায় জানালেন বীরসন্তানকে।
ছেলের মৃত্যুসংবাদ জানতেন মা। তবু, প্রিয় সন্তানকে একবার শেষবারের মতো চোখের দেখা দেখার জন্য বুক বেঁধে বসেছিলেন। শহীদের মা হয়ে একটিবার বুকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছাও হয়ত ছিল। কিন্তু কপ্টার দুর্ঘটনায় ঝলসে যাওয়া কফিনবন্দি ছেলের মুখটা অন্তিম লগ্নে দেখতে পেলেন না বৃদ্ধা মা। উর্দি পরা ছেলের (Darjeeling satpal rai) ছবির সামনে তাই বাঁধ মানল না চোখের জল। ছেলের ছবিতে ফুল দিতে গিয়ে বারবার ঝাপসা হয়ে আসছিল ছোট থেকে বড় করে তোলা সন্তানের মুখটি।
সৎপাল রাইয়ের দেহ যখন রবিবার তাঁর নিজের গ্রাম তাকদায় পৌঁছেছিল, তখন গোটা পাহাড়ে নেমে এসেছে গভীর অন্ধকার। সৎপালকে শেষ দেখার জন্য ঘণ্টার পর ঘন্টা ধরে পাহাড়বাসী তাঁর বাড়ির সামনে ভিড় করে অপেক্ষায় ছিলেন। সেনাবাহিনীর জওয়ানরা দেহ নামানোর সঙ্গে সঙ্গে সৎপালের মায়ের মতোই অপেক্ষারত জনতা কেউ আর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।
আরও পড়ুন: Netaji: ভারতীয় মুদ্রায় নেতাজির ছবি নিয়ে কেন্দ্রের মত জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট
তাকদার ছোট্ট গ্রামে বড় হয়ে ওঠা সৎপালের রাইয়ের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না স্থানীয়রা। এই গ্রামে শুধু সৎপাল নয়, অনেকেই সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। কয়েকজন দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। কিন্তু হেলিকপ্টারে ঝলসে মর্মান্তিক মৃত্যু তাঁরা কেউ ভুলতে পারছেন না। তবুও, এক যোদ্ধাকে শেষ প্রণাম জানাতে অন্ত্যেষ্টিস্থলে হাজির হলেন পাহাড়ের অগণিত মানুষ।
উল্লেখ্য, গতকালই সৎপাল রাইয়ের দেহ বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে বাগডোগরায় পৌঁছায়। সেখান থেকে তাঁর দেহ ব্যাঙডুবি সেনাছাউনিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর কফিনবন্দি দেহ সম্মান প্রদর্শনের জন্য শায়িত ছিল কিছুক্ষণ। সেনাবাহিনীর আধিকারিকসহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা শেষ শ্রদ্ধা জানান। সেখান থেকে মরদেহ রাতেই তাকদায় নিয়ে আসা হয়।