করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যজুড়ে বিধিনিষেধ চালু হয়েছে। এর ফলে বহু মানুষের রুটি-রুজিতে টান পড়ছে। কাজের অভাবে গৃহবন্দিও হয়েছেন অনেকে। প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দু-মুঠো অন্ন জোগাড়ের তাগিদে অনেকে আবার রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন। তেমনই একজন জলপাইগুড়ির প্রীতি দাস।
আরও পড়ুন: কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ভাতা বৃদ্ধি মমতার
জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের আদর্শপল্লির ভেলকিপাড়ার বাসিন্দা ১৫ বছর বয়সী প্রীতি হুইলচেয়ারে করে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় লটারির টিকিট বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছে। দু’বছর আগে প্যারালাইসিসে তাঁর বাবা রবি দাসের দুই পা ও হাত অকেজো হয়ে গিয়েছে। তারপর হুইলচেয়ারেই জায়গা হয়েছে রবিবাবুর।
আরও পড়ুন: বেআইনি অস্ত্রশস্ত্র সহ গ্রেফতার
তখন থেকে রবিবাবু ছোট মেয়ে প্রীতিকে নিয়ে লটারির টিকিট বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। অর্থের অভাবের জন্য চিকিৎসাও করাতে পারছেন না তিনি। রবিবাবু জানান, তিনি সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করতেন। দু বছর আগে কাজ থেকে বাড়ি আসার পর হঠাৎ স্ট্রোক হয়। তারপর তাঁর হাত ও পা প্যারালাইসিস হয়ে যায়। তখন থেকে ছোট মেয়ে প্রীতিকে নিয়ে লটারির টিকিট বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন।
তাঁর কথায়, ‘স্ত্রী ও চার মেয়েকে নিয়ে সংসার চলছিল। তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। স্ত্রী মারা গিয়েছে। ছোট মেয়ে প্রীতিকে নিয়ে সংসার চলছিল। আচমকা প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়ার পথে বসেছি। তাই বাধ্য হয়েই ছোট মেয়ে প্রীতিকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় লটারির টিকিট বিক্রি করে কোনওমতে সংসার চালাচ্ছি। লটারির টিকিট বিক্রি করে রোজ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আয় হচ্ছে। বিধিনিষেধের জেরে লটারি বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক মানুষের কাছে হাত পাততেও হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: অবশেষে প্লে স্টোরে ‘ব্যাটল গ্রাউন্ড মোবাইল ইন্ডিয়া’
এ বিষয়ে প্রীতি দাস বলেন, ‘অসুস্থ বাবাকে নিয়ে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে লটারির টিকিট বিক্রি করে কোনওরকমে সংসার চলছে। বিধিনিষেধের জেরে আগের চেয়ে রোজগার অনেকটাই কমেছে। রোজগার না থাকায় বাবার চিকিৎসাও করাতে পারছি না। এমনকি অর্থের অভাবে বাবার ক্যাথেটারটাও পাল্টানো হচ্ছে না। রোজ ব্যথায় কাতরাতে থাকেন বাবা। সরকারের তরফে কিছু সাহায্য করা হলে সুবিধা হয়।’