বাঁকুড়া: টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জল জমে এমনিতেই মাঠে নষ্ট হয়েছে ফসল৷ তার উপর বাঁকুড়ার সংগ্রামপুরের চাষিদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে হাতির পালের তাণ্ডব৷ খাবারের খোঁজে প্রত্যেকদিন হাতির দল ঢুকে পড়ছে মাঠের ভেতর৷ ফসল খেয়ে জমির দফারফা করে চলে যাচ্ছে৷ আবার পরের দিন চলে যাচ্ছে অন্য গ্রামের জমির ফসল খেতে৷ হাতির পালের তাণ্ডবের রোজনামচায় বিরক্ত বড়জোড়া রেঞ্জের অন্তর্ভুক্ত গ্রামের চাষি থেকে স্থানীয়রা৷ দাঁতালদের এলাকা থেকে সরানোর দাবিতে তাই মঙ্গলবার সকালে সংগ্রামপুরের বীট অফিসে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা৷ স্থানীয়দের বিক্ষোভের পর নড়েচড়ে বসেন বন কর্মীরা৷ গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করে জানান, হাতিদের অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ তার পরই বিক্ষোভ তুলে নেন গ্রামবাসীরা৷
আরও পড়ুন: নেতৃত্বের নির্দেশ উড়িয়ে লাইনে বসলেও ছন্নছাড়া কৃষক সভার রেল রোকো
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, খাবারের খোঁজে পশ্চিম মেদিনীপুরের সীমানা পেরিয়ে প্রায় ৮৭টি হাতির পাল বাঁকুড়ায় ঢুকে পড়ে৷ তার পর বিষ্ণুপুর, জয়পুর, সোনামুখী হয়ে দারকেশ্বর নদ ডিঙিয়ে এখন সংগ্রামপুরে হাজির হয়েছে৷ গত ২০-২২ দিন ধরে এখানেই আছে প্রতিদিন চাষের জমির ফসল নষ্ট করছে তারা৷ মঙ্গলবার সকালে হাতির হানায় প্রায় পাঁচশো হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে৷ এতেই আরও ক্ষোভে ফেটে পড়েন চাষিরা৷ হাতিদের সংগ্রাম বীট এলাকা থেকে অন্যত্র সরানোর দাবি জানাতে আজ বন দফতরের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, হাতির তাণ্ডবের কথা বন দফতরের অজানা নয়৷ কিন্তু হাতিদের তাড়ানোর ব্যাপারে বন দফতর উদাসীন৷
হাতি তাড়ানোর দাবিতে স্থানীয়দের বিক্ষোভ৷ মঙ্গলবার৷ ছবি-নিজস্ব৷
বন দফতরের এক কর্মীর কথায়, সমস্যা তৈরি হয়েছে অন্য জায়গায়৷ আসলে কয়েক বছর আগে হাতির হানা ঠেকাতে শীতলা বীট এলাকায় ইলেকট্রিক ফেন্সিং দেওয়া হয়েছিল৷ সেই ইলেকট্রিক ফেন্সিং পেরিয়ে হাতির দল আর এগোতে পারছে না৷ আবার বন দফতর এবং স্থানীয় মানুষের বাধায় হাতির দল পিছোতে পারছে না৷ তাই সংগ্রামপুরের বিভিন্ন গ্রাম লাগোয়া ফসলের জমিতে হাতির দল রোজ রোজ হানা দিচ্ছে৷ একই বক্তব্য স্থানীয়দের৷ তাঁদের কথায়, এখন উপায় ওই ইলেকট্রিক ফেন্সিং সরিয়ে হাতিদের অন্য জঙ্গলে পাঠিয়ে দেওয়া৷ এছাড়া বিকল্প আর উপায় আছে কিনা তা খুঁজে দেখছে বন দফতর৷