নন্দীগ্রাম: রাজ্যের বিরোধী দলনেতার নির্বাচনী কেন্দ্র নন্দীগ্রামে একঝাঁক বিজেপি নেতা গণইস্তফার সিদ্ধান্ত নিলেন। নন্দীগ্রামে মণ্ডল সভাপতি পদে দলের চাপিয়ে দেওয়া ব্যক্তিকে পছন্দ নয় সিংহভাগ নেতা-কর্মীর। অবিলম্বে মণ্ডল সভাপতি বদল না হলে গণইস্তফার হুমকি দিয়ে গত ১৯ মে জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে চিঠি দেন নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা-কর্মীরা। দল সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করায় ২০০জন নেতা-কর্মী গণইস্তফার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। সেই লক্ষ্যে সোমবার নন্দীগ্রামে ওই নেতা-কর্মীরা জরুরি বৈঠকে বসেছেন। বৈঠক শেষে পাকাপাকিভাবে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন। আগামী দিনে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনার জল্পনাও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
নন্দীগ্রাম বিধানসভার অধীন মোট পাঁচটি মণ্ডল কমিটির মধ্যে গত ২৪এপ্রিল দল শুধুমাত্র নন্দীগ্রাম-১দক্ষিণ মণ্ডল সভাপতি পদে বদল এনেছে। ওই মণ্ডল কমিটির সভাপতি ছিলেন জয়দেব দাস। এবার তাঁকে সরিয়ে শ্যামাপ্রসাদ মাইতিকে মণ্ডল সভাপতি করা হয়েছে। আর এ নিয়েই সোনাচূড়া, কালীচরণপুর, গোকুলনগর এলাকার বিজেপি নেতা-কর্মীরা বেজায় ক্ষুব্ধ। জয়দেব এলাকার লড়াকু নেতা হিসেবে পুরনো দিনের কর্মীদের আস্থা কুড়িয়েছিলেন। আচমকা তাঁকে সরিয়ে আনকোরা শ্যামাপ্রসাদকে মণ্ডল সভাপতি করায় অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। এই অবস্থায় স্থানীয় মণ্ডল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জেলা সভাপতিকে তিনজনের সম্ভাব্য নামের তালিকা পাঠানো হয়। ওই তিনজনের মধ্যে কেউ মণ্ডল সভাপতি না হলে গণইস্তফা দেওয়া হবে বলে সাফ জানানো হয়। জেলা সভাপতি চিঠি পাওয়ার পর কোনও পদক্ষেপ নেননি। এই অবস্থায় গণইস্তফার পথে হাঁটলেন জয়দেব ও তাঁর অনুগামীরা।
আর পড়ুন Paresh Adhikary: অঙ্কিতা অধিকারীকে বরখাস্তের নির্দেশ পৌঁছল মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গণইস্তফার তালিকায় জয়দেব ছাড়াও মণ্ডল কমিটির দু’জন সাধারণ সম্পাদক শ্বাশত মিদ্যা ও বিষ্ণুপদ প্রামাণিক, সহ সভাপতি রবিন পাত্রও অসীম করণ, মহিলা মোর্চার মণ্ডল সভাপতি মোহিনী দাস, যুব মোর্চার মণ্ডল সভাপতি পূর্ণ পাত্র সহ মোট ২০০জন আছেন। ১৯তারিখ জয়দেব ঘনিষ্ঠরা ৬১জনের তালিকা জেলা সভাপতির কাছে জমা করেছেন। একইসঙ্গে নন্দীগ্রাম-১দক্ষিণ মণ্ডলের সম্ভাব্য সভাপতি পদে তিনজন বিষ্ণুপদ প্রামাণিক, রবিন পাত্র ও দীনবন্ধু মণ্ডলের নাম জমা করা হয়েছে। একইসঙ্গে ৬১জনের নামের তালিকা জমা করা হয়েছে। ওই প্রস্তাব না মানা হলে গণইস্তফা চূড়ান্ত বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আর পড়ুন Arjun Singh: ব্যারাকপুরে শুভেন্দুকে ‘স্বাগত’ জানালেন সদ্য তৃণমূলে ফেরা অর্জুন
বিদ্রোহী বিজেপি নেতা জয়দেব মণ্ডল বলেন, পার্টি করতে গিয়ে ৪৮টি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছি। ছ’মাসের বেশি সময় ঘরছাড়া ছিলাম। অনেক অত্যাচার সহ্য করেছি। বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের মণ্ডল থেকে প্রায় চার হাজার ভোটের লিড দিয়েছি। তারপরও দল উপযুক্ত স্বীকৃতি দেয়নি। বরং মণ্ডল সভাপতি পদে আনকোরা একজনকে বসিয়েছে। অধিকাংশ নেতা-কর্মী এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না। তাই আপত্তির কথা জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। দল এখন আমাদের আবেদন শোনার অবস্থায় নেই। তাই বাধ্য হয়ে আমরা গণইস্তফার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সোমবার এনিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়।
এপ্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি তপনবাবু বলেন, যেসব জায়গায় মণ্ডল সভাপতি পদে নাম ঘোষণা হয়ে গিয়েছে সেখানে রদবদলের কোনও সম্ভাবনা নেই। এনিয়ে কেউ গণইস্তফার কথা বললে সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার।
আরও পড়ুন Serampore Murder: ট্যাটু দেখে গলা কাটা দেহ শনাক্ত, শ্রীরামপুরে যুবক খুনের পিছনে যৌনলালসা