মালদহ: বহরমপুরে কলেজ ছাত্রী খুনের তদন্তে এবার মালদহে পুলিস। খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে বৃহস্পতিবার রাতে বহরমপুর থানার পুলিস মালদহে নিয়ে আসে। প্রথমে তাকে ইংরেজবাজার থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে জেলার ডিআইবি অফিস, এর পর সুশান্ত সঙ্গে করে বহরমপুর এবং ইংরেজবাজার থানার পুলিস নেতাজি পুরবাজারে যান।
খুন করার জন্য সুশান্ত যে দোকান থেকে চাকু কিনেছিলেন, সেই দোকানটিকে দেখিয়ে দেয় সে। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় দোকানটি বন্ধ ছিল। দোকানের মালিকের খোঁজ নিচ্ছে পুলিস। এরপরে সুশান্তকে ইংরেজবাজার থানায় রেখে পুলিস মৃত ছাত্রী সুতপা চৌধুরীর বাড়িতে যান।ল সেখানে সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন তদন্তকারীরা।
এর পর সুতপাদের বাড়ির লাগোয়া সুশান্তর পিসির বাড়িতে যায় পুলিস। যদিও সেই সময় ওই বাড়িটি তালা বন্ধ থাকায় তদন্তকারীরা ফিরে যান। আজ, শুক্রবার পুলিস ধৃতকে নিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি বলরামপুরে যাবেন। সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরী জানান, খুনের ঘটনায় পুলিসের তদন্তে তাঁরা সন্তুষ্ট। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে সুশান্তর বিরুদ্ধে মালদহ মহিলা থানাতে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন স্বাধীনবাবু।
আরও পড়ুন: Bowbazar: বউবাজারের একাধিক বাড়িতে ফাটলের ঘটনায় রেলমন্ত্রীকে চিঠি অধীরের
২ মে রাতে বহরমপুরের গোরাবাজারে খুন হন বহরমপুর গার্লস কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা চৌধুরী। তিনি স্থানীয় একটি মেসে থেকে পড়াশোনা করতেন। তাঁর সঙ্গে ধৃত সুশান্তর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে পুলিস জানতে পারে। সম্প্রতি কোনও কারণে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য ঘটার জেরে ওই ঘটনা। পুলিস সূত্রের খবর, ওই রাতে স্থানীয় বেশ কয়েকজন যুবক দূর থেকে সুতপাকে কোপাতে দেখেন। দু-একজন কাছে যাওয়ার চেষ্টাও করেন। কিন্তু তাদের হুমকি দেয় সুশান্ত।
সেই ভয়ে তাঁরা পিছিয়ে আসেন। সুতপাকে বারবার ছুরি দিয়ে কুপিয়েছে সে। এমনকি রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁর পেটে একাধিকবার লাথিও মেরেছে। সুশান্ত পকেট থেকে মোবাইল বের করে তা ঘাঁটতে ঘাঁটতে একটা পাঁচিল টপকে পালায়। স্থানীয় কয়েকজনই দূর থেকে গোটা ঘটনার একটি ভিডিয়ো করে। তাতেই ওই নৃশংস দৃশ্য দেখা গিয়েছে। রাতেই সে ক্যাব ভাড়া করে মালদহে যাচ্ছিল। পুলিস তদন্তে নেমে জানতে পারে, সে একাধিকবার ক্যাব পাল্টেছে।
আরও পড়ুন: Ambulance Accident: আলিপুরদুয়ারের জাতীয় সড়কে অ্যাম্বুল্যান্স ও পিক আপের সংঘর্ষ, আহত ২
পুলিস জানিয়েছে, সুশান্ত তেলুগু সিনেমা ‘পেপার বয়’ দেখতে অনুরোধ করেছিলেন প্রেমিকাকে। সুতপার পরিবারের লোকজন যে তাদের ভালোবাসায় কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেই ধরনের পোস্টও শেয়ার করেছেন মালদার ওই যুবক। ‘ভালোবেসে ভুল করেছিল সে, সুখের বলি হয়েছে নিজেই’, সুশান্তর ফেসবুকে এ ধরনের বিভিন্ন পোস্ট উঠে এসেছে। তাই প্রতিহিংসা থেকেই সুতপাকে খুন করেছে সুশান্ত, এমনটাই অনুমান পুলিসের।