তমলুক: ময়নায় বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই। দেওর এবং বউদির প্রেমের কারণেই ওই বিজেপি কর্মীকে খুন হতে হয়েছে। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানালেন তমলুকের এসডিপিও আলি আবুবক্কর।
গত ১১ মে বুধবার ময়না থানার বাকচা এলাকা থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃত ব্যক্তির নাম কৃষ্ণপ্রসাদ পাত্র (৩৮)। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বরা জানায় কৃষ্ণ সক্রিয় বিজেপি কর্মী। তাঁকে রাজনৈতিক কারনে খুন করা হয়েছে। আর বিজেপির অভিযোগের আঙুল ছিল শাসকদলের দিকে।
ঘটনার পর ময়না থানার ওসি গোপাল পাঠক ও খুনের তদন্তকারী অফিসার চন্দন মাইতি তদন্তে নেমে বেশকিছু তথ্য পান। সেই তথ্যের ভিত্তিতে মৃতের স্ত্রী রুপালি পাত্র ও ভাই বলরাম পাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার তমলুক জেলা আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিসি হেফাজতের আবেদন করা হয়। বিচারপতি ১০ দিন হেফাজতের নির্দেশ দেন।
হেফাজতে নিয়ে দুই অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, বিজেপি কর্মী কৃষ্ণপ্রসাদকে তারা দু’জনে মিলে খুন করে বাড়ির কিছুটা দূরে খালের জলে ফেলে দেয়। কিভাবে খুন করে এবং কোথায় ফেলে দিয়ে আসে তা জানতে শুক্রবার দু’জনকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। উদ্ধার করা হয় খুন করার লোহার শাবল, একটি কাপড়, একটি গামছা ও তিনটি মোবাইল। মৃতের স্ত্রী রুপালি পাত্র স্বীকার করেছে সে লোহার শাবল দিয়ে ঘুমন্ত স্বামীর মাথায় আঘাত করে।
আরও পড়ুন- Kumarganj: কুমারগঞ্জে আদিবাসী মহিলা খুনে পুলিসের দাবি মানতে নারাজ বিজেপি
বাড়ির মধ্যেই কৃষ্ণপ্রসাদের মৃত্যু হয়। রক্ত পরিষ্কার করার জন্য কাপড় ও গামছা ব্যবহার করে। দেহ লোপাটের জন্য দেওরকে ডেকে পাঠায়। দুজনে মিলেই রাতের অন্ধকারে দেহ খালের জলে ফেলে আসে। জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, রুপালির সঙ্গে বলরামের বেশ কয়েক বছর ধরেই সম্পর্ক রয়েছে। তাদের প্রেমে যাতে স্বামী বাধা সৃষ্টি করতে না পারে তার জন্য পরিকল্পনা মাফিক খুন করেছে তারা।
কৃষ্ণপ্রসাদের মৃত্যুর তদন্তের আগেই বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয় রাজনৈতিক কারণে তাঁকে খুন করা হয়েছে। বিজেপির নেতৃত্বরা আন্দোলনে নামার হুমকিও দিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিস তদন্তে নেমে ঘটনার সত্যতা উদঘাটন করে। খুনের কয়েক ঘন্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করে।