কালনা: কালনার সায়নী দাস এশিয়ার প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসেবে পার করলেন মলোকাই চ্যানেল। ১৯ ঘণ্টায় বিপদসঙ্কুল মলোকাই চ্যানেল পার করলেন তিনি। সায়নী এর আগেই ইংলিশ চ্যানেল, ক্যাটরিনা চ্যানেল, রটনেস চ্যানেল জয় করেছেন। চলতি মাসের ১০ তারিখ তিনি উড়ে গিয়েছিলেন হাওয়াইয়ে। এরপর ওখানকার সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের অনুমতির অপেক্ষায় ছিলেন। অনুমতি পান ২৫ এপ্রিল।
এরপর ২৭ তারিখ সকালে জলে নামেন। ওইদিন রাতের মধ্যে চ্যানেল পার করেন। সায়নীর নামের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে রটনেস্ট ও ক্যাটরিনা চ্যানেল জয়ের সম্মান। এবার তাঁর লক্ষ্য আরও কঠিন ছিল। সুদূর হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মলোকাই চ্যানেল। সেই কঠিন বাধা অতিক্রমের লক্ষ্যে তিনি অনুশীলন শুরু করেছেন পুরীর পর ভাগীরথীতে। লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন কালনার জলকন্যা সায়নী।
এশিয়ার প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসেবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে মলোকাই চ্যানেলে নামার কথা ছিল সায়নীর। চ্যানেল কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত সম্মতিও মিলেছিল। সারা হয়ে গিয়েছিল সমস্ত প্রস্তুতিও।
কিন্তু করোনা আবহের জেরে বাতিল করতে হয় সেই কর্মসূচি। তত দিনে ২০১৭, ২০১৮, ২০১১-এ তিনি অতিক্রম করে ফেলেছেন ইংলিশ চ্যানেল, রটনেস্ট ও ক্যাটরিনা চ্যানেল। কিন্তু প্রস্তুতি নিয়েও থমকে যায় তাঁর মলোকাই চ্যানেল অভিযান। তবে হতাশ হলেও স্থানীয় পুকুরে নিয়মিত প্রশিক্ষণ চালিয়ে গিয়েছেন সায়নী। হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের ৪৪ কিমি দূরত্বের এই চ্যানেল পার হওয়া বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল।
সায়নীর বাবা তথা প্রশিক্ষক রাধেশ্যাম দাস বলেন, এশিয়ার প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসেবে মলোকাই চ্যানেল পার হওয়ার জন্য নেমেছে সায়নী। এর আগে ভারত থেকে দু’জন পুরুষ সাঁতারু মলোকাই চ্যানেল পার হওয়ার জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন। এই চ্যানেল পার করতে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। সেই কারণে পুরীর সমুদ্রে প্রশিক্ষণ সেরেছেন।
প্রশান্ত মহাসাগরের মলোকাই চ্যানেল পার হওয়ার অন্যতম সমস্যা জলে হাঙ্গরের মতো ভয়ঙ্কর জলজ প্রাণীর আনাগোনা। এসব কারণেই ইচ্ছে থাকলেও বহু সাঁতারুই মলোকাই চ্যানেলে নামতে চান না। তবে শার্ক শিল্ড পরেছিলেন সায়নী।
রোজ সকালে চার ঘণ্টা করে প্র্যাকটিস করেছেন। সায়নী জানান, পুরীর সমুদ্রে জেলিফিসের আক্রমণ অনুভব করেছি। মলোকাইয়েও এমন জলজ প্রাণীর আক্রমণ সামলাতে হবে। ওখানে হাঙর একটা বড় চিন্তা। সেজন্য শার্ক শিল্ড ছিল। রটনেস্টেও হাঙরের সমস্যা ছিল।
আরও পড়ুন: Durgapur Court: তাপপ্রবাহের জেরে ২ মে থেকে সময় পরিবর্তন দুর্গাপুর আদালতের