তমলুক: হাওড়ার (Howrah) প্রশাসনিক বৈঠক থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) পূর্ব মেদিনীপুর (East Medinipur) জেলার হলদিয়ার (Haldia) নয়াচরে শিল্পবিকাশের কথা বলেন। সেই ঘোষণার পর অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সহ প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা পরিদর্শন করে গিয়েছেন প্রাথমিকভাবে। মুখ্যসচিবের কাছে সার্ভে রিপোর্ট জমা করার আগে মঙ্গলবার সেচ ও জলপথ দফতরের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র (Soumen Mahapatra), মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি (Akhil Giri), জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী সহ অন্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক হয়৷
অন্যদিকে, একদল আধিকারিক নয়াচরে হাজির হন। তাঁরা সেখানে রাত্রিবাস করবেন বলেও জানা গিয়েছে। গত ২৪ নভেম্বর রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অত্রি ভট্টাচার্য সরজমিনে নয়াচর ঘুরে গিয়েছেন। সঙ্গে ছিলেন জেলা প্রশাসন এবং অন্য দফতরের অফিসাররা। ১১ তারিখ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই প্রকল্পের জন্য রিপোর্ট পাঠানো হয় নবান্নে। রাজ্য সরকার নয়াচরে ওই প্রকল্প রূপায়ণে সবুজ সঙ্কেত দিতেই তৎপর হয়েছে জেলা প্রশাসন।
নয়াচরে মোট ১২ হাজার একর জমি রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় দেড় হাজার একর জমি কলকাতা পোর্ট-নয়াচর ট্রাস্টের। বাকি জমি ভূমি দফতরের অধীনে রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ ওই এলাকায় মাছ চাষের সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি নয়াচরে সমবায়ের মাধ্যমে মাছচাষে যুক্ত ১২টি সোসাইটির কর্মকর্তা তমলুকে জেলা পরিষদে এসে মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র , মৎস্যমন্ত্রী , জেলা পরিষদের সভাধিপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সরকারের প্রকল্প রূপায়ণে যাতে তাঁদের রুজিরুটিতে কোনও সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছিলেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে , এই মুহূর্তে ১২ হাজার একর জমির মধ্যে পরিকাঠামো উন্নয়ন, মাছ চাষ, ইকো পার্ক তৈরি করতে, কোথায় কতটা জমি লাগানো হবে, তা নিয়ে সমীক্ষা হবে। ফিশিং হাব, ইকো ট্যুরিজম, সোলার প্ল্যান্ট, রাস্তাঘাট প্রভৃতি তৈরি হবে। ওই প্রকল্প রূপায়িত হলে নয়াচরে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়বে। মীনদ্বীপকে ঘিরে কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
চারটি সার্ভে টিম গঠন করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) দিব্যা মুরুগেসন ওই চারটি টিমের কাজ তদারকি করবেন। এছাড়াও টিমের প্রধান হয়েছেন জেলা পরিকল্পনা অফিসার, যুগ্ম প্রধান হয়েছেন হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী আধিকারিক, অ্যাসোসিয়েট অফিসার হয়েছেন সুতাহাটার বিডিও, ওই ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার অফিসার এবং মৎস্য দপ্তরের সহ অধিকর্তা (প্রশাসন)। ওই টিমের অধীনে মোট চারটি সার্ভে টিম নয়াচরে কোথায় কতটা জমি রয়েছে, তা নিয়ে ফিল্ড সার্ভে করবে। মঙ্গলবার থেকেই তাদের কাজে নিয়োগ করা হচ্ছে।
এদিকে, জেলার দুই মন্ত্রী, জেলাশাসক ও প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন৷ সেই বৈঠকেও হলদিয়ার নয়াচরে প্রকল্পগুলিকে রূপায়িত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়। জেলার দুই মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পকে দ্রুত বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে একজোট হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।