কেতুগ্রাম: বাবা দিনমজুর, মা গৃহবধূ। পরিবারে সদস্য পাঁচজন। অভাব নিত্যসঙ্গী কাটোয়া মহকুমার কেতুগ্রামের বাসিন্দা বিউটির। বাড়ির বড় মেয়ে কলেজ পড়ুয়া বিউটিই বোনেদের পড়াশুনোর খরচ চালান। রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্পে আবেদনপত্র জমা করলেও মেলেনি ২৫ হাজার টাকা। কবে টাকা মিলবে, সেই দিকেই তাকিয়ে বিউটি।
পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম-২ ব্লকের রাউন্দী গ্রামের বাদিন্দা বিউটি থান্দার স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। কলেজে পড়ার পাশাপাশি বাড়িতে বসে টেলারিং, কাঁথা স্টিচের কাজ ও ঘর সাজানোর ফুলদানি তৈরি করে পড়াশুনোর খরচ চালান তিনি। সংসারের খরচের জন্য প্রতি মাসে কিছু টাকা বাবার হাতেও তুলে দেন।
বাবা খোকন থান্দার দিনমজুরের কাজ করেন। তবে প্রতিদিন কাজ মেলে না। মা কল্পনা থান্দার গৃহবধূ। বিউটির আরও দুই বোন রয়েছে। বড় বোন একাদশ শ্রেণিতে এবং ছোটো বোন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। তিন বোনের পড়াশোনার খরচটাও নেহাত কম নয়। বাড়ির বড় মেয়ে হিসেবে বোনেদের পড়াশোনার খরচও নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন বিউটি।
প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা নিয়ম দুই বোনকে পড়ানোটাও তাঁরই দায়িত্ব। দিনের বাকি সময় কাটে সেলাই মেশিনে বসে মহিলাদের পোশাক তৈরি করে কিংবা শাড়ির উপর নকশা কেটে সূক্ষ্ম সূচের মাধ্যমে কাঁথা স্টিচের কাজ করে। অর্ডার থাকলে কখনও কখনও নিজে হাতেই তৈরি করেন সুন্দর সুন্দর ঘর সাজানোর ফুলদানিও।
বিধি-নিষেধের জেরে অবশ্য রোজগারে ভাঁটা পড়েছে বিউটির। এদিকে রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য আবেদন পত্র জমা করলেও মেলেনি ২৫ হাজার টাকা। এই টাকাটা হাতে পেলে পড়াশুনোর খানিকটা সুবিধা হত বলে জানান বিউটি। বিউটির বাবা-মার আশা, তাঁদের বড় মেয়ে একদিন ভালো চাকরি করবে। দু’মুঠো অন্ন জোগাড়ে আর সমস্যা হবে না তখন!