কাটোয়া : করোনা আবহে বন্ধ হয়েছে স্কুল। কিন্তু তাই বলে পঠনপাঠন বন্ধ হতে দেননি এক দল শিক্ষক ও শিক্ষিকা। কখনও গাছের তলায়, কখনও আবার খোলা আকাশের নীচে বসেই ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের পড়াতে দেখা গেছে শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের। এমনই এক শিক্ষকের খোঁজ মিলল কাটোয়ায়।
কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে গাড়ি চলাচল প্রায় নেই বললেই চলে। এই প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেই কাটোয়ার সাতটি গ্রামে সাইকেলে করে গিয়ে গরীব ছেলে মেয়েদের বিনা বেতনেই পড়ান শেখ শফিকুল ইসলাম। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক গ্রামে গিয়ে বাল্য বিবাহ বন্ধের জন্য অভিভাবকদের সচেতন করেন তিনি। শফিকুল ইসলামের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কেউ পরিযায়ী শ্রমিকের ছেলে। কারোর বাবা হয়তো লরি চালান। অন্যান্য রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকেরও কাজ করেন অনেক অভিভাবক। তাঁরা হয়তো সংসার চালাতে হিমশিম খান। টাকা পয়সার অভাবে ছেলে মেয়েদের ঠিক করে পড়াতে পারেন না। সেই সব ছেলেমেয়েদের কথা ভেবেই বিনামূল্যে পড়াচ্ছেন শফিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন : ১১ বছর ধরে প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে স্কুল, রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
কাটোয়ার করজগ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁধমুড়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ শফিকুল ইসলাম করোনা কাল থেকেই বিনা বেতনে পড়ানো শুরু করেছিলেন। ২০০৪ সালে তিনি পঞ্চাননতলা উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে পার্শ্বশিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। তাঁর স্ত্রী দোলেনা খাতুন অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে কাজ করেন। তাতেই শফিকুলের সংসার চলে। দুঃস্থ পড়ুয়াদের থেকেও তিনি কোনও বেতন নেন না।
কৃষক পরিবারের সন্তান হওয়ার কারণে ছোটবেলা থেকে খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করেছেন শেখ শফিকুল ইসলাম। তাই এই করোনা কালে গ্রামের অসহায় ছেলেমেয়েদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “করোনা পরিস্থিতিতে অনেক অভিভাবকের আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়েছে। তাই আমি তাঁদের ছেলে মেয়েদের থেকে বেতন নিই না। সাইকেলে করে গ্রামে গ্রামে গিয়ে পড়াতে আমার ভাল লাগে।”