হুগলি : শক্তির আরাধনায় কালী পুজো করার রীতি প্রাচীন।প্রাচীন কালে ডাকাতদের, কলিকালে পুলিশকেও দেখা যায় সেই শক্তির আরাধনায় ব্রতী হতে। কালী নিয়ে অনেক গল্প গাঁথা আছে, পুজোও হয় নানা ভাবে। তবে প্রচলিত প্রথার বাইরে গিয়ে পুজো করেন কালীশঙ্কর সাঁতরা। তিনি কালীর বুকে পা তুলে দিয়ে পুজো করেন। ভাঙা কাঁচের উপর নৃত্য করে মায়ের আরাধনা করেন। আরামবাগে এই পুজো দেখতে ভিড় জমান বহু ভক্ত।
হুগলির আরামবাগের রতনপুর গ্রামের বাসিন্দা কালীশঙ্কর অব্রাহ্মণ বাগদী। তাঁর পুজো করার পদ্ধতিও অভিনব। হুগলির আরামবাগের রতনপুর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছে বড় মা’র পুজো। গ্রামে স্থায়ী মন্দির রয়েছে। সেই মন্দিরেই থাকেন কালীশঙ্কর। মা কালীর সামনে কাঁচ ভেঙে সেই কাচের টুকরোর উপর নৃত্য করার পর মা কালীর বুকে পা তুলে মায়ের আরাধনা শুরু করেন।
কাচের টুকরোর উপর দাঁড়িয়ে তিনি নাচতে নাচতে পুজো শুরু করেন। কাঁসর, ঘণ্টা, শাখের আওয়াজে মন্দির চত্বর পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। মায়ের ভক্তিতে পুজারী কালীশঙ্কর উপর গড়াগড়িও দেন। তবে পুজোর সময় তিনি শাস্ত্রীয় মন্ত্র পাঠ করেন না। নিজের বাঁধা গান, নিজের সুরে গেয়ে দেবীর পুজো করেন। অসংখ্য ভক্ত তা দেখতে মন্দির প্রাঙ্গনে ভিড় জমান। এই ভাবেই মা পুজো গ্রহন করেন বলে জানান কালীশঙ্কর।
কেন তিনি এভাবে পুজো করেন?
আরও পড়ুন : বর্গভীমার পুজো শেষ হলে সমগ্র তমলুকে শুরু হয় কালীর আরাধনা
উত্তরে কালীশঙ্কর বলেন, ছোটোবেলায় কালীশঙ্কর ঠাকুর গড়তেন। সেই ঠাকুর তাঁর তুলনায় অনেক বড় হয়ে যেত বলে ঠাকুরের বুকের উপর পা দিয়ে উঠে ঠাকুর গড়া শেষ করতেন। নিজে পুজোও করতেন। এ নিয়ে তাঁর পরিবার তাঁকে কথা শোনাত, বারণ করত। কিন্তু কালীশঙ্কর তা শুনতেন না। তাঁর মতে, কালী ঠাকুর তাঁকে টানত, সেই টানেই এখনও পুজো করে চলেছেন।
বড় মা’র পুজোকে ঘিরে রতনপুরে মেলা বসত। ১০ থেকে ২০ হাজার মানুষের ভোগের আয়োজন করা হত। করোনা কালে সে-সব বাতিল করতে হয়েছে বলে জানান মন্দিরের সেবাইতরা।