ঝালদা: একজন কাউন্সিলর খুন হলেন। তাঁর মৃত্যুর তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তার আগেই তড়িঘড়ি বোর্ড গঠন কেন? গদিতে বসার এতই তাড়া! ঝালদা পুরসভার বোর্ড গঠনের প্রস্তুতি শুরু হতেই এই প্রশ্ন তুললেন নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু।
পূর্ণিমার কথায়, ‘আমার স্বামীর খুনের কিনারা না হওয়া প্রযন্ত বোর্ড গঠন করা উচিৎ নয়। যেহেতু এই বোর্ড গঠন করাকে কেন্দ্র করেই আমার স্বামীকে খুন করা হয়েছে, তাই যতক্ষণ না আমার স্বামীর খুনিরা ধরা পরছে ততক্ষণ পর্যন্ত এই বোর্ড গঠন মানছি না।’ পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানিয়েছেন, প্রশাসনিক নিয়ম মেনেই বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই সভা ডাকা হয়েছে।
এর আগে ২৯ মার্চ ঝালদা পুরসভার বোর্ড গঠনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছিল। পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ তাতে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। পূর্ণিমা কান্দুর দাবি, ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষ ষড়যন্ত্র করে খুন করেছে। তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম, তাঁদের এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিসের ওপর কোনও ভরসা নেই। আমি সিবিআই তদন্তের দাবি করছি।
আরও পড়ুন: Jhalda Murder: ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের ঘটনায় গ্রেফতার আরও এক
শনিবার ঝালদা পুরসভার বোর্ড গঠনের প্রস্তুতি শুরু করল পুরুলিয়া জেলা প্রসাশন। ৫ এপ্রিল পুরসভার সভাকক্ষে বৈঠক ডাকা হয়েছে। ঝালদার এসডিও বৈঠকের কথা জানিয়ে জয়ী কাউন্সিলরদের বাড়িতে চিঠিও পাঠান। যদিও তপন কান্দুর স্ত্রী তথা ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা কান্দু সেই চিঠি নিতে অস্বীকার করেন। তাঁর ভাইপো মিঠুন কান্দু চিঠিটি সই করে নেন।
ঝালদা পুরসভার মোট আসন ১২। এর মধ্যে তৃণমূল ও কংগ্রেস ৫টি করে আসনে জয়ী হয়েছে। নির্দলরা পেয়েছেন ২টি আসন। ফল ঘোষণার দিন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী শীলা চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে এই মুহূর্তে তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যা ৬। ১৩ তারিখ দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন ২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। ফলে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৪।
আরও পড়ুন: Tapan Kandu Calcutta HC: ঝালদায় তপন কান্দু খুনে কেস ডায়েরি চাইল আদালত
তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত নেতা রঞ্জন কর্মকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে জয় লাভ করেছিলেন। তিনি তৃণমূলকে সমর্থন করবেন বলে জানান। ফলে অঙ্কের হিসেবে একপ্রকার নিশ্চিত, ঝালদা পুরবোর্ড দখল করতে চলেছে তৃণমূল। যদিও বোর্ড গঠন নিয়ে কোনও দলই মুখ খুলতে চাইছে না।