বাঁকুড়া: ঝালদায় নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনে পাঁচ পুলিস কর্মী বসানোর নির্দেশ দিল পুরুলিয়া জেলা পুলিস৷ কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে বসানো হয়েছে৷ সেই তালিকায় রয়েছেন এক মহিলা সাব ইন্সপেক্টর, দু’জন কনস্টেবল ও দু’জন হোমগার্ড। খুনের দিন এই ৫ জনের দল ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরে নাকা পয়েন্টে ডিউটি করছিলেন৷ তারপরও তাঁরা কিছু আঁচ করতে না পারায় কর্তব্যে গাফিলতির জন্য জেলা পুলিস লাইন বসিয়ে দিয়েছে। তপন কান্দুর পরিবারের বক্তব্য, ঝালদার আইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল৷ কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না৷ এ কারণেই পুলিসির তদন্তে ভরসা নেই তপনের পরিবারের৷ তাঁরা সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড়৷
গত রবিবার সন্ধেয় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। বিকেলে হাঁটার সময় ঝালদা-বাগমুন্ডি রোডের উপরে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। গোকুলনগর গ্রামের কাছে উল্টো দিক থেকে আসা একটি বাইকে ৩ জন দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে। তাঁর পেটে গুলি লাগে। রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তপন। এরপর দুষ্কৃতীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায়। প্রথমে ঝালদা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঝাড়খণ্ডের রাঁচির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তপনবাবুর মৃত্যু হয়।
২০১৫ সালের পুরভোটে ফরওয়ার্ড ব্লকের হয়ে জিতেছিলেন তপন কান্দু। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দিলেও পরে কংগ্রেসের পতাকা হাতে তুলে নেন। এবারের পুরসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটেই ভোটে লড়েন। তপনের বিরুদ্ধে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়ান তাঁরই ভাইপো। তাঁকে হারিয়ে জেতেন তপন। খুনের ঘটনায় ভাইপো দীপক কান্দুকে গ্রেফতার করে ঝালদা থানার পুলিস। বুধবার তাঁকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত৷
আরও পড়ুন Tiljala Shoot out: হোলির দিন সকালে ‘গুলি’ চলল তিলজলায়, জখম ২
তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু ঝালদা থানার আই সি সঞ্জীব ঘোষের নামে জেলা পুলিস সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুর নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই ঝালদা থানার আই সি সঞ্জীব ঘোষ নানান ভাবে তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে চাপ দিচ্ছিলেন। তৃণমুল কংগ্রেসে যোগদান করার জন্য আমার ও প্রয়াত স্বামী তপন কান্দুকে চাপ দিতে শুরু করেন। ফলে, পুলিসের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ বাড়তে থাকে৷ শনিবার তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুর গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন৷ পুরুলিয়া জেলা আদালতে তাঁর বয়ান নথিভুক্ত করা হয়। স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় গোপন জবানবন্দি দিতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন পূর্ণিমা দেবী।