আলিপুরদুয়ার: শেষে কিনা ক্যাঙারুও?
উত্তরবঙ্গকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করে ভিন রাজ্যে বা দেশে সাপ, কচ্ছপ, গন্ডারের শৃঙ্গ, বাঘের চামড়া, হাতির দাঁত ইত্যাদি পাচারের মতো ঘটনা ঘটেছে৷ কিন্তু ক্যাঙারু পাচারের (Kangaroo Smuggling) ঘটনা মনে করতে পারছেন না বন কর্মীরা৷ শনিবার দুপুরে আলিপুরদুয়ারের বারোবিশা পুলিস ফাঁড়ি এলাকায় একটি পূর্ণ বয়স্ক ক্যাঙারু উদ্ধারের (Alipurduar Kangaroo Rescued) ঘটনায় তাই বিস্মিত বন দফতর (Forest Department)৷ পুলিস নিশ্চিত, পাচারের উদ্দেশ্যেই ক্যাঙারুটিকে অন্য রাজ্যে পাঠানো হচ্ছিল৷ এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বনপাল উজ্জল ঘোষ বলেন, ‘অভূতপূর্ব ঘটনা৷ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখতে হবে৷’
অসম লাগোয়া পাখরিগুড়ি এলাকায় নাকা চেকিং চলাকালীন একটি ট্রাকের ভিতর উদ্ধার হয় ওই জন্তুটি৷ কুমারগ্রামের আইসি বাসুদেব সরকার জানিয়েছেন, পাখরিগুড়ি এলাকায় সবসময় পুলিসের নাকা চেকিং চলে৷ এদিন দুপুরে গুয়াহাটি থেকে একটি ট্রাক আসছিল৷ সেটি দেখে সন্দেহ হওয়ায় পুলিসকর্মীরা তল্লাশি চালান৷ তল্লাশির সময় ট্রাকের ভিতর একটি বড় খাঁচা খুঁজে পাওয়া যায়৷ ত্রিপল দিয়ে সেটি ঢাকা ছিল৷ ত্রিপল সরাতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে যায় পুলিস কর্মীদের৷ ভিতরে কি না একটি ক্যাঙারু৷ বাসুদেব সরকার জানিয়েছেন, নিঃসন্দেহে ওটা অস্ট্রেলিয়ান ক্যাঙারু৷ ভারতের কয়েকটি চিড়িয়াখানায় হাতে গোণা ক্যাঙারু থাকলে বনে নেই৷
উদ্ধার হওয়া ক্যাঙারু৷ শনিবার৷ নিজস্ব চিত্র৷
এই ঘটনায় পুলিস ইমরান শেখ ও জাহিদ শেখ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে৷ জানা গিয়েছে, দু’জনই হায়দরাবাদের বাসিন্দা৷ অসমের গুয়াহাটি থেকে ট্রাকে করে ক্যাঙারু নিয়ে তারা হায়দরাবাদ যাচ্ছিল৷ অন্যদিকে উদ্ধার হওয়া প্রাণীটি যে ক্যাঙারু তা নিশ্চিত করেছে বন দফতর৷ তবে বনকর্মীরা জানিয়েছেন, ক্যাঙারুটি খুবই অসুস্থ৷ ডিহাইড্রেশনে ভুগছে৷ তাই উদ্ধারের পরই দেরি না করে জীবনদায়ী ওষুধপত্র দেওয়া হয়৷ প্রাণীটিকে খেতেও দেওয়া হয়৷
আরও পড়ুন: Tangra Fire: ট্যাংরায় আগুন নেভাতে দেরি, বালতি করে দমকলের ট্যাঙ্কে জল ভরছেন স্থানীয়রা
পুলিস জানিয়েছে, ক্যাঙারু ভারতের বন্যপ্রাণী নয়৷ তাই অ্যানিম্যাল অ্যাক্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ তবে আপাতত ক্যাঙারুর স্বাস্থ্য উন্নতির দিকে জোর দিচ্ছেন বনকর্মীরা৷ এই ঘটনায় তাঁরা বিস্মিত৷ বন দফতর জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ পাচারের ইতিহাসে ক্যাঙারু পাচারের নজির নেই৷ স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় প্রচণ্ড আলোড়ন তৈরি হয়েছে৷