ওয়েবডেস্ক- ‘মনুষ্যত্বের সংজ্ঞা’ এবার শুধুই বইয়ের পাতায় থাকবে। কারণ যত দিন যাচ্ছে, মানুষের মধ্যে ‘নৃশংস’ আচরণ প্রকাশ পাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের মীরাটের মুসকান থেকে মেঘালয়ের মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে একটা কথাই সামনে আসছে প্রতিবার, ‘বিশ্বাসের বিসর্জন’। সব থেকে বড় কথা এত নিখুঁত পরিকল্পনা করে খুনের পর, খুব স্বাভাবিকভাবেই জীবন যাপন করা! যা আরও ভয়াবহ। ফের সেই নৃশংসতার সাক্ষী থাকল বর্ধমানের (Burdwan) কাটোয়া (Katwa) ।
মদের সঙ্গে অ্যাসিড মিশিয়ে স্বামীকে হত্যা। শুধু এখানেই শেষ নয়, খুনের পর একই প্রেমিক অভিজিৎ বাগের (Abhijit Bag) সঙ্গে রাত কাটাল স্ত্রী।
কাটোয়ার আমুল গ্রামের মিতা দাস (Mita Das) স্বামী খুনের ঘটনায় আগেই গ্রেফতার হয়েছে। এবার গ্রেফতার তাঁর প্রেমিক অভিজিৎ বাগ। পুলিশের দাবি, স্বামীকে খুন করার ষড়যন্ত্রে প্রেমিকের সঙ্গে যুক্ত ছিল মিতা।
আরও পড়ুন- ২ গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্র মহেশতলা, বাইকে আগুন, আক্রান্ত পুলিশ
শনিবার রাতে প্রথমে মদে অ্যাসিড মিশিয়ে স্বামীকে অচেতন করে মিতা। পরে বালিশ চাপা দিয়ে স্বামীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে সে। আরও গা-শিউরে ওঠার মতো বিষয় হল, খুনের পর মিতা মৃত স্বামীর দেহের পাশেই রাত কাটায় সে।
কাটোয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজীব কুমার জানান, রবিবার সকালে স্বামীর দেহ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। ঘটনার তদন্তে উঠে আসে স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক এবং পূর্ব পরিকল্পনার তথ্য।
কাটোয়ার একটি হোটেলে বসে প্রেমিক অভিজিৎ বাগের সঙ্গে মিতা স্বামী খুনের পরিকল্পনা করে। পুলিশের দাবি, অভিজিৎ-কে ফোনে ‘খুন করার কৌশল’ বলে মিতা।
পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় মিতা খুনের কথা স্বীকার করেছে এবং ঘটনাস্থলের পুনর্নির্মাণে খুনের ধরন স্পষ্ট হয়। এরপর রবিবার রাতেই অভিযুক্ত প্রেমিক অভিজিৎ-কে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কাটোয়া থানায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন কাটোয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজীব কুমার, কাটোয়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিশ্র এবং কাটোয়া থানার আইসি তীর্থেন্দু গাঙ্গুলি।
কাটোয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজীব কুমার জানান, অভিযুক্তদের কাছ থেকে অ্যাসিডের বোতল, মদের বোতল, বাঁশের লাঠি ইত্যাদি উদ্ধার হয়েছে।
এই দ্রুত তদন্ত ও অভিযুক্তদের গ্রেফতারকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে কাটোয়া থানার পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা শোনা যাচ্ছে। ঘটনাটিকে দৃষ্টান্তমূলক হিসেবে দেখছেন অনেকে।
দেখুন আরও খবর-