দুর্গাপুর : দুর্গাপুরে এক অভিনব প্রতারণার ঘটনা। নিজেদের বনদফতরের আধিকারিক বলে পরিচয় দিয়ে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণার চেষ্টা। গ্রেফতার ২ জন।
দুর্গাপুরের বিপিএল টাউনশিপের বাসিন্দা দিব্যেন্দু আচার্যের পরিচয় হয় সঞ্জয় দাস এবং সোমনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে। সোমনাথ নিজেকে ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার এবং সঞ্জয় নিজেকে রেঞ্জ অফিসার বলে দিব্যেন্দুর কাছে পরিচয় দেয়। বনদফতরে দিব্যেন্দুকে চাকরি করে দেওয়ার নামে প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা নেয় তারা। সেই ৫ লক্ষ টাকা দিলেই সরকারি চাকরির অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পাওয়া যাবে, এই আশায় দিব্যেন্দু বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার দেনা করে তাদের হাতে ওই টাকা তুলে দেয়। এরপরও নতুন ফন্দি জালে গোটা পরিবারকে ফাঁসিয়ে দেয় সোমনাথ চক্রবর্তী ও সঞ্জয় দাস।
আরও পড়ুন : নিউ আলিপুরে প্রতারণা চক্র, গ্রেফতার ২২ জন ভুয়ো অ্যামাজন কর্মী
বীরভূমের ইলামবাজারের এক জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে দিব্যেন্দুকে বলা হয় যে, এই হচ্ছে তাঁর কর্মস্থল। সঙ্গে দেওয়া হয় সরকারি বনদফতরের লোগো লাগানো নিয়োগপত্র। দিব্যেন্দু তাঁর এক বন্ধুকে পুরো ব্যাপারটা জানায়। বীরভূমের ওই যুবক সরকারি চাকরির লোভে প্রতারকদের লক্ষাধিক টাকা দেয়। দিব্যেন্দুর ওই বন্ধুকে এই প্রতারকরা জঙ্গল পাহারা দেওয়ার কাজে নিযুক্ত করে। দিব্যেন্দুর ওই বন্ধু এই কাজ করার সময় পুলিশের জালে ধরা পড়ে। এরপর পুলিশকে নিজেদের নিয়োগপত্র দেখানোর পর তাঁরা বুঝতে পারেন যে, দিব্যেন্দু ও তাঁর বন্ধু, দু’জনেই প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন। তাঁরা দুর্গাপুরের কোকওভেন থানায় লিখিত অভিযোগ জানান।
আরও পড়ুন : প্রাক্তন সেনা কর্তাকে প্রতারণা, লেকটাউন থেকে গ্রেফতার অভিযুক্ত
অভিযোগ পেয়ে প্রতারকদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। ধরা পড়ে সঞ্জয় দাস এবং সোমনাথ চক্রবর্তী। তাদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই প্রতারণার জাল অনেক দূর পর্যন্ত ছড়ানো। এদিকে দুর্গাপুরে দিব্যেন্দু এবং তাঁর পরিবার খুবই সমস্যার মধ্যে পড়েছে। দিব্যেন্দুর বাবা একটি বেসরকারি কারখানায় সামান্য নাইট গার্ডের কাজ করেন। ছেলের সরকারি চাকরির আশায় বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার দেনা করে তিনি ৫ লক্ষ টাকা জোগাড় করেছিলেন। সেই টাকা ফেরত না পেলে আত্মহত্যা করা ছাড়া পরিবারের কাছে আর কোনও বিকল্প রাস্তা নেই বলে জানান দিব্যেন্দুর বাবা ও মা। দুর্গাপুরের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার নীলরতন পান্ডা জানান, এসব প্রতারকদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। সূত্র মারফত জানা গেছে, শুধু দুর্গাপুর নয়, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াতেও বেশ কয়েকজন যুবক এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন।