কেতুগ্রাম: সেই রাতে ইয়ার-দোস্ত নিয়ে বাড়িতে মোচ্ছব করে সরিফুল। অনেক রাত পর্যন্ত চলে খানা পিনা। স্ত্রী রেণু তখন ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তখনই দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমন্ত স্ত্রীর উপর চড়াও হয় সরিফুল। ধারালো অস্ত্রের কোপে ডান হাতের কবজি কেটে নেয়। স্ত্রী হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে রেণুর হাত কেটে দিয়েছে সরিফুল, এমনই অভিযোগ গুরুতর জখম স্ত্রী’র পরিবারের।
সিনেমার গল্পকেও হার মানিয়ে দেওয়ার মতো হাড়হিম করা অপরাধ করে এলাকা ছাড়া সরিফুল শেখ। এমনকি পালানোর সময় সে স্ত্রী রেণুর যাবতীয় সার্টিফিকেট ও চাকরি সংক্রান্ত কাগজপত্রও নিয়ে পালিয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। ২০১৭ সালে যখন বিয়ে হয় প্রায় তখন থেকেই বেকার সরিফুল। অপরদিকে রেণু খাতুন দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্সের কাজ করতেন। কেতুগ্রামের বাড়ি ছেড়ে স্ত্রী’র সঙ্গেই ওই হাসপাতালে থাকত সরিফুল। কিন্তু তখন থেকেই সরকারি চাকরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন রেণু। অবশেষে সফলও হন। সরকারি নার্সের চাকরির প্যানেলে তাঁর নাম ওঠে।
তারপর থেকেই সরিফুল ও তার পরিবার বেঁকে বসে। ঘটনার দিন দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ইস্তফা দিয়ে প্রথমে নিজের বাড়ির লোকের সঙ্গে দেখা করে শ্বশুরবাড়ি ফিরে যান রেণু। বাড়ি ফিরে দেখেন তাঁর স্বামী বন্ধু-বান্ধব নিয়ে খানাপিনায় মশগুল। এমনিতেই সরকারি চাকরি করতে না দেওয়া নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে অশান্তি চলছিল। সে কারণে কথা না বাড়িয়ে নিজের ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন রেণু। ঘূণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর এত বড় সর্বনাশ করবে স্বামী।
আরও পড়ুন- Post Poll Violence: ফের সিবিআই তলবে হাজিরা অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বিধায়ক-নেতার
রেণুর বাবা বলেন, ওদের ধারণা ছিল, আমার মেয়ে সরকারি চাকরি করতে গেলে আর বোধহয় শ্বশুর ঘর করবে না। তাই এমন নৃশংস কাজ করল। যদিও রেণু এবং সরিফুলের পরিচয় পড়াশোনা করার সময় থেকেই। তারপর দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়। আসলে সরিফুলের ভিতরে নিরাপত্তার অভাবজনিত আশঙ্কা থেকে প্রতিশোধের একটা মনোভাব গড়ে উঠেছিল ধীরে ধীরে।